স্টাফ রিপোর্টার:
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মেরুয়াখলা মমিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুনামগঞ্জ সদর-বিশ্বম্ভরপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য বিরোধী দলীয় হুইফ অ্যাড. পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ বলেন- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার দূর্বলতা রয়েছে। তিনি বলেন আমি রাজ বংশের সন্তান নই, সাধারণ পরিবারে আমার জন্ম। শিক্ষাই আমাকে এতদূর আসতে সহযোগিতা করেছে। আমার জন্মস্থান মাইজবাড়িতেও আল-হেরা জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসা রয়েছে। আল-হেরা মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা করে অনেকেই ঢাকা ভার্সিটিসহ বিভিন্ন ভার্সিটিতে স্থান করে নিয়েছে। অনেকেই আবার স্কলারশীপ নিয়ে বিদেশে যাচ্ছে। মেরুয়াখলা মাদ্রাসারও অনেকে ঢাকা ভার্সিটিতে পড়াশোনা করছে। মনে রাখবেন মাদ্রাসার পড়াশোনার বেইজ ভালো হলে মেডিকেল ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়া সহজ হয়। মাদ্রাসার ছাত্ররা এখন আর পিছিয়ে নেই ঢাকা ভার্সিটিতে পড়াশোনা করে বিসিএস দিয়েছে, পুলিশে চান্স পেয়েছে। জুডিশিয়ালে পরীক্ষা দিয়ে সহকারি জজ হিসাবে নির্বাচিত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমি ২০১৪ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে পদাধিকার বলে মেরুয়াখলা মমিনিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সভাপতি নির্বাচিত হই। আমি গভনিং বডির সভাপতি পদের কার্যক্রম শুরু করার আগে মাদ্রসার হিসাব নিকাশ বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে বলি। আমি হিসাব নিকাশ ভালো জানিনা। তাই অডিট কমিটি গঠন করি। অডিট কমিটি আমাকে রিপোর্ট দেবে তারপর আমি দায়িত্ব নেবো। কিন্তু, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এর পর থেকে আমার সাথে আর কোন যোগাযোগ করলেন না। অনেক দিন পর যোগাযোগ করে জানতে পারি উনারা বুদ্বি করে তিনমাস পার করে কমিটির মেয়াদ শেষ করে দিয়েছেন।
আমি ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে যোগাযোগ করে জানতে পারলাম সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এডিসি সার্বিক কে সভাপতি করা হয়েছে। আমি বাদ দিয়ে দিলাম, মাদ্রাসার অধ্যক্ষও যোগাযোগ করলেন না। পরবর্তীতে মাদ্রসার প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য ডাঃ মাহবুবুর রহমান এর মাধ্যমে জানতে পারি ডাঃ মাহবুব মাদ্রাসার গভর্ণিং কমিটির সভাপতি হয়েছেন। আমি বাদ দিলেও ডাঃ মাহবুব যেহেতু প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সন্তান, মাদ্রাসার প্রতি তাদের আলাদা দরদ আছে। সে জন্য তারা বাদ দিতে পারে না। তিনি আরো বলেন, যেহেতু মাদ্রাসা কমিটিতে বর্তমানে উচ্চ শিক্ষিত মেধাবী ছেলে-মেয়েরা রয়েছেন, আমার বিশ্বাস এই প্রতিষ্ঠান এখন ভালো চলবে।
পাশাপশি মাদ্রাসায় বিদ্যুৎসাহী সদস্য হিসেবে কমিটিতে রয়েছেন সিলেট মহিলা কলেজের সহকারি অধ্যাপক ডঃ আব্দুল কাদের রাজন, সিলেটে দায়িত্ব প্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম, সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার তানিয়া আক্তার, প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের ডাঃ সাদিকুর রহমান সুমনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমি এই ৭ বছর মেয়াদে মাদ্রাসায় কোন সহযোগিতা করতে পারলাম না। কারণ উনারা আমাকে দূরে রাখতে চাইলেন। আজকের সংবর্ধনা সভায় বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মাস্টার মাদ্রাসায় ভবন দেওয়ার জন্য অনুরোধ করলেন। কিছু দিন আগেও আমি মাদ্রাসা খোঁজছি চারতলা বিশিষ্ট ভবন ফার্ণিচারসহ দেওয়ার জন্য। প্রতিষ্ঠান খোঁজে পাই নাই। বর্তমানেও সদর-বিশ্বম্ভরপুর- নির্বাচনী এলাকায় এখনও শিক্ষা প্রকৌশলীর অধীনে দেড়শ কোটি টাকার ভবন তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। এই মাদ্রাসায় বিল্ডিং না দেওয়া আমাদের ব্যর্থতা না সহযোগিতার অভাব আপনারা বিবেচনা করবেন। করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারের উন্নয়ন কাজে বাধা আসছে। আমাদেরকে শিক্ষা মন্ত্রনালয় থেকে চিঠি দেওয়া হয়। আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম দেই।
সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন কথা দিচ্ছি মাদ্রাসার জন্য ও আমাদের সন্তানদের সুন্দর ভবিষৎ গঠন করতে আমার পক্ষ থেকে সর্বাতœক সহযোগিতা করবো।
২৭ মে বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় মাদ্রাসার গর্ভনিং বডির সভাপতি ডাঃ মাহবুবুর রহমান এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মাস্টার, ধনপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম তালুকদার, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা আবু সাঈদ, মাওলানা কাজী আমীন আত তাফহীম প্রমুখ।