আরিফুর রহমান, ঝালকাঠি :
বাবা, মা, ভাই, বোন, বন্ধু-বান্ধব, এমন কি পারিবারিক শত্রুকেও মেনশন করে ফেসবুকে হৃদয়বিদারক স্ট্যাটাস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সদর উপজেলার বিনয়কাঠি শেরে বাংলা ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজের স্নাতক ছাত্র মো. মাহফুজুর রহমান খান রাজু।
রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়ির গাছে সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। রাজু খান সদর উপজেলার বিনয়কাঠি শেরে বাংলা ফজলুল হক ডিগ্রি কলেজের পরিচালনা কমিটির সদস্য ও গগন গ্রামের দফাদার বাড়ির হাবিবুর রহমান খান (বাবুল) এর পুত্র।
তার ফেসবুক আইডিতে হৃদয় বিদারক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করে, “বাবা পারলে আমাকে মাপ করে দিয়েন।এমন কিছু করব আমি জীবনে কল্পনাও করি নায় বাবা। তাই আজ আমি কইরা ফালাইছি। আপনার পা দইরা জে আমি ক্ষমা চাইব তাও আমি পারতে আছি না আব্বা। আপনার গায় আমি হাত দিছি আব্বা। আমি জদি কাওকে ভালবাসি সেটা আপনি ছিলেন সেই আপনার সাথেই আমি আমার জীবনের বড় ভুলটা করছি। মা তোমার সাথেও আমি অনে খারাপ বেবহার করছি জীবনে তুমিও পারলে ক্ষমা করে দিও। বড় এবং মেজ ভাইয়া আপনাদে সাথে আমি অনেক ভুল করছি পারলে আপনারাও আমাকে ক্ষমা কইরা দিয়েন। বড় আর ছোট আপু তোমাদের মনেও আমি অনেক কস্ট দিছি তোমরাও পারলে আমাকে ক্ষমা কইরা দিও। জয়, আবির, আকাষ, তাসনিম তোদের কে আমি আমার জীবনে কান্না ছারা কিছুই দিতে পারি নায়। আমি এমন একটা লোক জে কিনা তার পরিবারকে কস্ট ছারা কিছুই দিতে পারে নায়। আর জীবনে কিছু পারবে কিনা তাও জানা নাই।তাও সবাই আমাকে অনেক ভাল বাসতো। আজ আমি জে কাজটা করছি তার কোন ক্ষমা হয় না। তাই কার মনে আমি আর কস্ট দিতে চাই না বলেই এই সুন্দর পৃথিবী ছেরে চলে জাচ্ছি। এই পৃথিবীতে আমার থাকার কোন অদিকার নাই। পারলে আপনারা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিয়েন। অনেক কে অনেক কিছু বলার ছিল কিন্তু কার কাছেই কিছু শেয়ার করতে পারলাম না। ভাল থাকুক এই পৃথিবীর সকল মানুষ গুলা। আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দাই না। দয়া করে আমার মৃত্যুর পরে আমাকে নিয়া কেউ সত্রু তামি করবেন না। রেজাউল ভাই সরা জীবন ই তো আব্বার সাথে সত্রু তামি করছেন এখন আর কইরেন না পারলে আব্বার পাসে থাইকেন আমার জীবনের শেষ অনুরোদ টা রাখেন ভাই।আমার মৃত্যুর জন্য আমি নিজেই দাই। আল্লাহ সারা জীবনে তোমার কাছে জা কিছু চাইছি তুমি তা কিছুই দেও নায়। তোমার কাছে আমার জীবনের শেষ চাওয়া আমার পরিবারকে সারা জীবন সুখে রেখ। মো: মাহফুজুর রহমান খান রাজু”।
কলেজ শিক্ষক সাইফ খান জুয়েল জানান, আমার কলেজের ডিগ্রির ছাত্র মাহফুজুর রহমান রাজু আত্মহত্যা করেছে। উঠতি বয়সী কলেজ ছাত্র রাজুর আত্মহত্যা যেমন শোক বহন করে তেমন সে আত্মহত্যা করার আগেও তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছে তা অত্যন্ত হৃদয় বিদারক। স্ট্যাটাসে রাজু বাবা, মা, ভাই, বোন, বন্ধু, বান্ধব এমনকি তার পারিবারিক শত্রুকেও ইঙ্গিত দিয়েছেন। সবার কাছে সে ক্ষমা এবং দোয়া চেয়েছেন।
ঝালকাঠি সদর থানার অফিসার ইন চার্জ (ওসি) মো. খলিলুর রহমান জানান, গগন গ্রামের এক কলেজ ছাত্র গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। মৃতদেহ বরিশাল শেরই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয়ে নেয়া হয়েছে। সেখানেই ময়না তদন্তের কাজ সম্পন্ন হবে।