আইপিএলে দুই হট ফেভারিট চেন্নাই সুপার কিংস ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে ৪ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই। আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতেছে রোহিত শর্মার দল, যা তাদের নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ৩৪ বলে ৮৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে চেন্নাইকে একাই হারিয়ে দিয়েছেন কাইরন পোলার্ড, ম্লান হয়ে গেছে আম্বাতি রাইডুর ২৭ বলে ৭২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস।
লক্ষ্যটা ২১৯ রানের, জবাব দিতে নেমে ১২ ওভারে ৯৩ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের ক্ষণ গুনছিল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। তবে, কাইরন পোলার্ডের সেটা মনে হয় পছন্দ হয়নি, প্রথম ৭ বলে ৩ রান করা পোলার্ড ঝড়টা শুরু করেন রবিন্দ্র জাদেজাকে দিয়েই। সেই ওভারে ৩ ছক্কায় আসে ২০ রান, লুঙ্গি এনগিদির করা পরের ওভারে ২ ছক্কায় আরও ১৬ রান।
শার্দুল ঠাকুরের ওভারে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৩ রান নিয়ে ৪৮ বলে ১২৬ রানের সমীকরণ ৩০ বলে ৬৬ তে নামিয়ে আনেন কাইরন পোলার্ড। তুলে নেন এবারের আইপিএলে দ্রুততম ফিফটি, ৬ ছক্কা ও ৩ চারে ১৭ বলে স্পর্শ করেন পঞ্চাশ। সে ওভার থেকে আসে আরও ১৬ রান, ২৪ বলে ৫০ রানে নেমে সমীকরণ।
তবে, স্যাম কারান ১৭তম ওভারে ২ রান দিয়ে ক্রুনাল পান্ডিয়াকে আউট করলে ম্যাচের পরিস্থিতি নতুন মোড় নেয়, সমীকরণ উঠে যায় ১৮ বলে ৪৮ রানে। পরের ওভারে ফাফ ডু প্লেসিসের হাতে জীবন পান পোলার্ড, সেই ওভার থেকে আসে ১৭ রান। পরের ওভারের প্রথম ৩ বলে ১৪ রান নিয়ে সমীকরণ ১০ বলে ১৯ রানে নিয়ে আসেন হার্দিক পান্ডিয়া।
৭ বলে ১৬ রান করে স্যাম কারানের বলে ফিরে যান হার্দিক পান্ডিয়া, শেষ ওভারে জয়ের জন্য মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নেননি পোলার্ড, পরের ২ বলে ২ চারের পর চতুর্থ বল আবারও সিঙ্গেল এড়িয়ে যান তিনি। শেষ ২ বলে ৮ রান প্রয়োজন হলে পঞ্চম বলে ছক্কা ও শেষ বলে ২ রান নিয়ে মুম্বাইকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দেন কাইরন পোলার্ড।
আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড গড়ে মুম্বাই, নিজেদের ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে কখনই জয় পায়নি তারা। জয়ের নায়ক কাইরন পোলার্ড ৩৪ বলে ৬ চার ও ৮ ছক্কায় ৮৭ রানে অপরাজিত থাকেন, রোহিত শর্মা ৩৫ ও কুইন্টন ডি কক করেন ৩৮ রান।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ঋতুরাজ গায়কোয়াদকে হারায় চেন্নাই সুপার কিংস, দ্বিতীয় উইকেটে ৬১ বলে ১০৮ রান যোগ করেন মঈন আলী ও ফাফ ডু প্লেসিস। ৩৬ বলে ৫ চার ও ৫ ছক্কায় ৫৮ রান করা মঈন আলীকে ফেরান জাসপ্রিত বুমরাহ, তবে চেন্নাই বড় ধাক্কা খায় পরের ওভারে।
পরপর দুই বলে ৫০ রান করা ফাফ ডু প্লেসিস ও ২ রান করা সুরেশ রায়নাকে ফিরিয়ে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা তৈরি করেন কাইরন পোলার্ড, এরপর ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন আম্বাতি রাইডু। ২০ বলে ফিফটি তুলে নেওয়ার পর ২৭ বলে ৪ চার ও ৭ ছক্কায় ৭২ রানে অপরাজিত থাকেন, রবিন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে গড়েন ৪৮ বলে ১০২ রানের জুটি।
জাদেজার ব্যাট থেকে আসে ২২ বলে ২২ রানের ইনিংস, মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হয়ে ১২ রান দিয়ে ২ উইকেট পেয়েছেন কাইরন পোলার্ড, ১ উইকেট পেতে ৪ ওভারে ৫৬ রান খরচ করতে হয়েছে জাসপ্রিত বুমরাহকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
চেন্নাই সুপার কিংস ২১৮/৪, ২০ ওভার; (আম্বাতি রাইডু ৭২*, মঈন আলী ৫৮, ফাফ ডু প্লেসিস ৫০, রবিন্দ্র জাদেজা ২২* কাইরন পোলার্ড ২/১২, ট্রেন্ট বোল্ট ১/৪২, জাসপ্রিত বুমরাহ ১/৫৬)।
মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ২১৯/৬, ২০ ওভার; (কাইরন পোলার্ড ৮৭*, কুইন্টন ডি কক ৩৮, রোহিত শর্মা ৩৫, ক্রুনাল পান্ডিয়া ৩২, স্যাম কারান ৩/৩৪, মঈন আলী ১/১)।
ম্যাচ সেরাঃ কাইরন পোলার্ড।