নতুন কোচ টমাস টুখেলের অধীনে বদলে যাওয়া চেলসি দারুণ গোছানো ফুটবল উপহার দিল। পরে রিয়াল মাদ্রিদও ঘুরে দাঁড়ালো বটে।
কিন্তু তা যথেষ্ট হলো না। মূল্যবান একটি অ্যাওয়ে গোল নিয়ে ফিরল অল ব্লুজরা।
মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) ঘরের মাঠ আলফ্রেদো দি স্তেফানোতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে চেলসির বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছে প্রতিযোগিতাটির রেকর্ড শিরোপাধারী রিয়াল।
চেলসির হয়ে ম্যাচের ১৪তম মিনিটে গোল করে দলকে লিড এনে দেন ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ আর ২৯তম মিনিটে দুর্দান্ত গোলে রিয়ালকে সমতায় ফেরান করিম বেনজেমা। আর তাই তো ইস্তানবুলের টিকিটের জন্য দুই দলকেই চেয়ে থাকতে হচ্ছে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ফিরতি লেগের দিকেই।
ম্যাচের শুরু থেকেই স্বাগতিক রিয়ালের ওপর চড়াও হয় চেলসি। আক্রমণাত্মক শুরু দিয়ে লস ব্ল্যাঙ্কোসদের জানান দেয় এখানে তারা জিততে এসেছে। আর তার প্রমাণ মেলে ম্যাচের মাত্র ১০ মিনিটের মাথায়। প্রতি আক্রমণে ডান প্রান্ত থেকে মেসন মাউন্টের রিয়ালের ডি বক্সের বাইরে থাকা পুলিসিচের কাছে বল বাড়ান, সেখান থেকে ডি বক্সের ভেতর টিমো ভার্নারকে দুর্দান্ত এক পাস দেন পুলিসিচ। তবে ছয় গজের ভেতর থেকে রিয়াল গোলরক্ষক থিবাউ কোর্তোয়া দুর্দান্তভাবে ভার্নারকে রুখে দিলে প্রথম যাত্রায় রক্ষায় পায় স্বাগতিকরা।
তবে না রিয়ালকে মোটেও স্বস্তিতে দম ফেলতে দেয়নি ব্লুজরা। একের পর এক আক্রমণে রিয়ালের রক্ষণকে ছিঁড়েখুঁড়ে খেয়ে ফেলতে থাকে টিমো ভার্নার, ক্রিশ্চিয়ান পুলিসিচ এবং মেসন মাউন্টরা। আর তাই তো রিয়ালের মাঠে গোল পেতে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি টমাস টুখেলের দলকে।
১৪তম মিনিটে অ্যান্তোনিও রুডিগারের লম্বা করে বাড়ানো বল পেয়ে রিয়ালের দুই ডিফেন্ডার নাচো এবং ভারানের মধ্য দিয়ে বল নিয়ে ডি বক্সে ঢুকে পড়েন পুলিসিচ। এরপর থিবো কোর্তোয়াকে মাটিতে আছড়ে ফেলে জোরালো শট নেন, তাতে ভারান বুক ছোঁয়ালেও গোল রুখতে পারেনি। আর ম্যাচের ১৪তম মিনিটেই ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় চেলসি।
গোল খেয়ে যেন হুঁশ ফেরে শেষ আটে লিভারপুলকে হারানো রিয়ালের। ধার বাড়ে তাদের আক্রমণে। ২৩তম মিনিটে বেনজেমার দূর থেকে নেওয়া শট পোস্টের বাইরের দিকে লাগে। পাল্টা আক্রমণে ভীতি ছড়াচ্ছিল চেলসিও।
জমজমাট লড়াইয়ের ২৯তম মিনিটে সমতায় ফেরে রিয়াল। ছোট করে নেওয়া কর্নারে মার্সেলো দূরের পোস্টে ক্রস বাড়ান। লাফিয়ে হেড করেন কাসেমিরো, পরের হেডে এদের মিলিতাও খুঁজে নেন বেনজেমাকে। আর ফরাসি এই স্ট্রাইকার জটলার মধ্যে দারুণভাবে হেডে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পোস্টের দিকে না ফিরেই ডান পায়ের ভলিতে ঠিকানা খুঁজে নেন। আসরে বেনজেমার এটি ষষ্ঠ গোল। প্রতিযোগিতাটির গোলদাতাদের তালিকায় মোট ৭১ গোল নিয়ে সাবেক রিয়াল তারকা রাউল গনজালেসের পাশে বসলেন তিনি।
খেলার দ্বিতীয়ার্ধেও চেলসির আধিপত্য দিয়েই শুরু হয়। গোটা ম্যাচে রিয়ালের খেলোয়াড়দের বেশ ক্লান্ত বলেই দেখা গেছে। চেলসির গতির সঙ্গে কোনোভাবেই পেরে উঠছিল না লুকা মদ্রিচ-টনি ক্রুসরা। দ্বিতীয়ার্ধের ৪৮তম মিনিটে মার্সেলোর ভুলে গোল খেতে বসেছিল রিয়াল। ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও ভেরনার সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন।
শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হওয়ায় ওই ১-১ গোলের সমতায় ম্যাচ শেষ হয়। আর ফাইনালের টিকিটের ভাগ্য ঝুলে থাকে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ওপর। সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে চেলসির ঘরের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে আগামি ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় রাত একটায় মুখোমুখি হবে দুই দল।