কে. এম. সাখাওয়াত হোসেন (স্টাফ রিপোর্টার) : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ থেকে ব্যবসায়ীর ট্রাকভর্তি ধান নিয়ে ২১ মার্চ পাবনার ঈশ্বরদীর উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে উধাও হয়ে যায় এর চালক।
বিষয়টি প্রতারণা বুঝতে পেরে পরদিন মোহনগঞ্জ থানায় সাধারণ ডয়েরি করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী একরামুল হাসান চৌধুরী। ওই ট্রাকটিতে ১৮৫টি বস্তায় ৩৪৬ মন ৩৫ কেজি ধান ছিল। যার মূল্য তিন লক্ষ ৮ হাজার ৪৪১ টাকা বলে ডায়েরিতে উল্লেখ করেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে অবস্থান সনাক্ত কারা পর ২৩ মার্চ দিবাগত রাত তিনটার দিকে এসআই মো. সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে চালক মিনজু মিয়া ওরফে মঞ্জু (৩৫) গাজীপুরের মৌচাক থেকে আটক করার পর তার দেয়া তথ্যে টাঙ্গাইলের কালিহাতি থেকে অপর সহযোগী তসলিম তালুকদারকে (৪০) আটক করা হয়। এ সময় কালিহাতির এলেঙ্গা ফিলিং স্টেশনে পার্কি করা অবস্থায় ধান বহনকারী ট্রাকটি জব্দ করার পাশাপাশি স্থানীয় একটি অটো রাইস মিলের চালাত থেকে ৩৪৬ মন ৩৫ কেজি ধান ও পাশে থাকা খালি ১৮৫টি বস্তা জব্দ করা হয়।
রোববার (২৫ মার্চ) বিকাল তিনটায় মোহনগঞ্জ থানায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বারহাট্টা সার্কেল) সাইদুর রহমান।
ওসি মোহাম্মদ আবদুল আহাদ খান জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বিকাল চারটার দিকে ওই দুইজনকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। আদালতে তাদের সাত দিনের রিমান্ত আবদেন করবে পুলিশ।
ওসি আরো জানান, চালক মঞ্জু গত ২০ মার্চ দিবাগত রাত তিনটার দিকে পৌরশহরের পাইলট স্কুলের সামনে থেকে একটি ট্রাকে করে ১৮৫ বস্তা ধান নিয়ে পাবনার ঈশ্বরদীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়। তবে চালানে ট্রাকের সঠিক রেজিস্ট্রেশন নম্বর (ঢাকা মেট্রো- ট ২০-০১০০) এর পরিবর্তে (ঢাকা মেট্রো- ট ২০০১০৭) লিখে। পাশপাশি নিজের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর না দিয়ে সেখানে তার সহযোগীর নম্বর এন্ট্রি করে। পরদিন প্রতারণার বিষয়টি টের পেয়ে ব্যবসায়ী একরামুল হাসান চৌধুরী বিষয়টি থানায় অবিহত করেন।
তাৎক্ষণিক বিষয়টি পুলিশ সুপার আকবর আলী মুনসী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এক এম মনিরুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বারহাট্টা সার্কেল) সাইদুর রহমানকে অবগত করা হয়। পরে তাদের দেয়া দিক নির্দেশনায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতারকদের অবস্থান সনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করার পাশপাশি ব্যবসায়ীর খুয়ে যাওয়া ধান উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া ধানের মূল্য তিন লক্ষ ৮ হাজার টাকা বলে জানানো হয়।
পুলিশের এমন অন্তরিকতায় বর্তমানে হাওরের ধান ব্যবসায়ী ও কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরবে বলে ধারণা ওই পুলিশ কর্মকর্তার।