হ্যাটট্রিকের সহজতম সুযোগ ছিল লিওনেল মেসির সামনে। ম্যাচের একদম শেষ দিকে গিয়ে পেনাল্টি পেয়েছিল বার্সেলোনা। জোড়া গোল করা মেসি, এটি থেকে লক্ষ্যভেদ করলেই হয়ে যেত হ্যাটট্রিক। কিন্তু সেই সুযোগটিই নিলেন না মেসি। ফলে প্রায় ১৪ মাস পর হলো না হ্যাটট্রিক।
অধিনায়ক হিসেবে নিজের করণীয় পূরণ করে শেষের পেনাল্টিটি সতীর্থ অ্যান্তনিও গ্রিজম্যানকে নিতে দেন মেসি। যিনি পুরো ম্যাচে খুব একটা ছন্দে ছিলেন না। মেসির এমন সিদ্ধান্তের পর স্পট কিক থেকে গোল করতে কোনো সমস্যাই হয়নি গ্রিজম্যানের। যা ছিল ম্যাচে বার্সেলোনার পঞ্চম গোল।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘরের মাঠে তুলনামূলক দুর্বল গেটাফের বিপক্ষে ৫-২ গোলের বড় জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। যেখানে জোড়া গোলের পাশাপাশি একটি এসিস্ট করেছেন মেসি। এছাড়া সারা ম্যাচেই দুর্দান্ত খেলেছেন বার্সা অধিনায়ক। মূলত পাঁচটি গোলেই পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ অবদান রেখেছেন তিনি।
ম্যাচের একদম শুরুতে ডি-বক্সের বাইরে থেকে আচমকা বুলেট গতির শট নেন মেসি। যা ক্রসবারের ভেতরের অংশে লাগলেও জালে প্রবেশ করেনি। তবে প্রথম গোলের জন্য ৮ মিনিটের বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। সার্জিও বুসকেটসের বুদ্ধিদীপ্ত থ্রু বল ধরে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন মেসি।
চার মিনিটের মধ্যে এই গোল আবার ফেরত পেয়ে যায় বার্সেলোনা। তবে সেটিও নিজেদের ভুলে। বাম দিক থেকে ক্রস করেন গেটাফের মার্ক কুকুরেইয়া। সেই বলে বক্সে দাঁড়িয়ে ফ্লিক করেন অ্যাঞ্জেল রদ্রিগেস। বল লক্ষ্যের ধারেকাছেও ছিল না। কিন্তু ক্লেমেন্ত লংলের গায়ে লেগে ঢুকে যায় জালে, আত্মঘাতী গোল হজম করে বার্সেলোনা।
অবশ্য এই আত্মঘাতী গোলের শোধটা নিজেরাই করে গেটাফে। ম্যাচের ২৮ মিনিটের সময় নিজেদের মধ্যে তালগোল পাকিয়ে আত্মঘাতী গোল হজম করে তারা। ডি-বক্সের বাইরে গেটাফের দুই ডিফেন্ডারের পায়েই ছিল বল। খানিক দূর থেকে চার্জ করছিলেন মেসি।
বলটি বিপদমুক্ত করতে গোলরক্ষক ডেভিড সোরিয়ার উদ্দেশ্যে ব্যাক পাস দিয়ে দেন ডিফেন্ডার সোফিয়ান চাকলা। কিন্তু সেটি ছিল সোরিয়ার নাগালের বাইরে। বলে খুব বেশি গতি না থাকলেও, ধীরে ধীরে গড়িয়ে প্রবেশ করে জালে। আত্মঘাতী গোলের সুবাদেই ফের লিড নেয় বার্সা।
মিনিট পাঁচেকের মধ্যে ব্যবধান বাড়ান মেসি। ডান দিক থেকে তার বাম পায়ের শট দূরের পোস্টে লাগে। তবে ফিরতি বল আসে মেসিরই পায়ে। সেটি থেকে আবার দূরের পোস্ট দিয়েই বল জালে জড়ান এ আর্জেন্টাইন জাদুকর। যার সুবাদে ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা। লিগে মেসির এটি ২৫তম গোল।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে ৬৯ মিনিটের সময় পেনাল্টিতে দ্বিতীয় গোল হজম করে বার্সেলোনা। ডি-বক্সের মধ্যে গেটাফে ফরোয়ার্ড এরেস উনালকে ফাউল করেন বদলি হিসেবে নামা আরাউহো, পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। স্পটকিক থেকে গোল করে ব্যবধান কমান উনাল নিজেই।
তবে এই ব্যবধান আবার বাড়ানোর দায়িত্বটাও নেন আরাউহো। ম্যাচের নির্ধারিত নব্বই মিনিটের মিনিট তিনেক আগে মেসির বাঁকানো কর্নারে লাফিয়ে ওঠা হেডে হালিপূরণ করেন আরাউহো। পরে অতিরিক্ত যোগ করা সময়ে ফাউলের শিকার হন গ্রিজম্যান। সেখান থেকে পাওয়া পেনাল্টিতেই আসে পঞ্চম ও শেষ গোলটি।
এ জয়ের ফলে লা লিগার শিরোপা ভাগ্য নিজেদের হাতেই রাখল বার্সেলোনা। এ পর্যন্ত খেলা ৩১ ম্যাচে তাদের সংগ্রহ ৬৮ পয়েন্ট, অবস্থান করছে তিন নম্বরে। অন্যদিকে ৩২ ম্যাচে ৭৩ পয়েন্ট নিয়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ শীর্ষে। সমান ম্যাচে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে রিয়াল মাদ্রিদ।