রমজানের পরেই শুরু হবে পবিত্র হজের প্রস্তুতি। কিন্তু করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে সেই আয়োজন হবে কিনা, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়তো পরবর্তী সময়ে আসবে।
তাই বলে হজের কাজে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা বন্ধ রাখবে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বরং বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। একই সঙ্গে করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রেও এনআইডি সেবা অগ্রাধিকারভিত্তিতে দেওয়া হবে।
সর্বাত্মক লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে হোম অফিস করছে নির্বাচন কমিশন। আপাতত, সরাসরি সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। অনলাইনে সেবা কী করে বাড়ানো যায়, কিংবা করোনা পরিস্থিতির সহসা উন্নতি না হলে সেবা কী করে অব্যহত রাখা যায়, তা নিয়েই বুধবার এক বৈঠকে বসেছিল ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদার সভাপতিত্বে অনলাইনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় অন্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তারা জানান, মূলত এটি একটি অনলাইন সমন্বয় সভার মতো ছিল। এতে কোভিড পরিস্থিতি, বিভিন্ন নির্বাচন ও নাগরিক সেবা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পরিস্থির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে কী করে জনগণকে জরুরি প্রয়োজনে সেবাগুলো ওপেন রাখা যায়, সে সিদ্ধান্ত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে এনআইডি সেবা বন্ধ না রাখার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।
যারা হজ করতে যাবেন, টিকা দেবেন বা অন্য অতি জরুরি ক্ষেত্রে যাদের এনআইডি প্রয়োজন, তারা অনলাইনে যথাযথ কারণ উল্লেখ করে প্রমাণাদি দিলে তাদের কার্ড অগ্রাধিকারভিত্তিতে হয়ে যাবে।
নতুন ভোটার কিংবা এনআইডি সংশোধন কিংবা হারানো কার্ড উত্তোলন, যে সেবাই হোক না কেন, জরুরি প্রয়োজনের প্রমাণসাপেক্ষে দ্রুত এবং অগ্রাধিকারভিত্তিতে সেবা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ইসির যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান বলেন, এনআইডি সেবা চালু আছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
তবে করোনাকালীন কাউকে হার্ড কপি সরবরাহ করা হবে না। আবেদন নিষ্পত্তি হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজেই নিজের কার্ডের পিডিএফ কপি ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করতে পারবেন বা লেমিনেটিং করে নিতে পারবেন।
গত বছরও করোনা শুরু হলে এনআইডি কার্যক্রম বন্ধ রাখেনি কমিশন। তবে সেবার অগ্রাধিকার নির্দিষ্ট করা ছিল না। সে সময় প্রায় অর্ধকোটি মানুষকে অনলাইনে সেবা দিয়েছে ইসি।
ইসির এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ুন কবীর জানান, করোনাকালে গত বছরে ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ৩৬৯ জন নতুন ভোটার অনলাইনে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে নিজের এনআইডি নিজেই ডাউনলোড করে নিয়েছেন।
এছাড়াও ২৭ লাখ নাগরিককে বিভিন্ন ধরনের সেবা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে হারানো কার্ড উত্তোলন সংক্রান্ত আবেদনের বিপরীতে ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ১৬২ জন সেবা নিয়েছেন। ৪ লাখ ৮১ হাজার ৩৭০ জন সংশোধনের সেবা নিয়েছেন। এছাড়া নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন নেওয়া হয়েছে ৫ লাখ ৪৩ হাজার ৪৫ জনের।
২০২০ করোনায় সব বন্ধ হয়ে গেলে ২৬ এপ্রিল অনলাইনে এনআইডি সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করা নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে https://services.nidw.gov.bd/ ঠিকানায় গিয়ে যার যার প্রয়োজন অনুযায়ী আবেদন করার ব্যবস্থা রেখেছে সংস্থাটি। সূত্র: বাংলানিউজ