দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনা-৩ (কেন্দুয়া-আটপাড়া) আসনে বিএনপি’র রাজনীতিতে যে মেরুকরণ তৈরি হয়েছে, তা শুধু দলীয় মনোনয়ন নিয়ে অভ্যন্তরীণ অসন্তোষের প্রকাশ নয়; বরং এটি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফলেও প্রভাব ফেলতে পারে- এমন মূল্যায়ন করছেন স্থানীয় রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা।

দলের চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে আলহাজ্ব মো. দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া দুলাল মূলত সেই মেরুকরণকেই প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন, যা দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলে আলোচিত ছিল।

তবে, সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) আসন্ন সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষে দিনে নেত্রকোনা-৩ আসনে লড়াইটা কী বিএনপি বনাম স্বতন্ত্র (বিএনপি) প্রার্থীদের মধ্যে হবে? এমন অবস্থার চিত্র ফুটে উঠেছে।

আজ বিকেলে ধানের শীষের মনোনীত ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমানের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। অন্যদিকে মো. দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া দুলাল তিনি কেন্দুয়ায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন।

এরআগে গত ৩ নভেম্বর বিএনপি ২৩৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে। এতে নেত্রকোনা-৩ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পান জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী। ফলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়র দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন।

এই সিদ্ধান্তের পরপরই কেন্দুয়া-আটপাড়া দুই উপজেলায় বিএনপি’র তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ পায়। চায়ের দোকান থেকে হাট-বাজার, সবখানেই আলোচনায় উঠে আসে একটি প্রশ্ন: দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে দেলোয়ার দুলাল কি নির্বাচনে নামবেন?

সেই প্রশ্নের উত্তর মিলেছে দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলালের ফেসবুক পোস্টে, যেখানে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল ও ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী- দুজনের শক্তির জায়গা আলাদা।

দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল মূলত তৃণমূলভিত্তিক জনপ্রিয় নেতা। তিনি একাধিকবার সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন এবং স্থানীয় পর্যায়ে ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা তাঁর বড় শক্তি। তাঁর বিরুদ্ধে দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বড় কোনো দুর্নীতির অভিযোগ না থাকায় তাঁর পক্ষে কাজ করছে বলে মনে করেন স্থানীয় নেতারা।

অন্যদিকে ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী সাংগঠনিক রাজনীতির প্রতিনিধি। জেলা পর্যায়ে তাঁর প্রভাব, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আস্থা এবং দলীয় কাঠামোর সমর্থন তাঁকে একটি শক্ত অবস্থানে রেখেছে। দলীয় শৃঙ্খলা ও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মানার প্রশ্নে তিনি কঠোর অবস্থান নিয়েছেন, যা তাঁর বক্তব্যেই স্পষ্ট।

দীর্ঘ সময় ধরে জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ না পাওয়া ভোটারদের মধ্যে এবার ভোট নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ায় বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলের জন্য মাঠ উন্মুক্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিএনপির ভোট ভাগ হয়ে গেলে তার সুফল অন্য কোনো প্রার্থী বা জোট পেতে পারে- এমন আশঙ্কাও রয়েছে।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, যদি দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে শক্ত অবস্থান নেন, তবে এটি কেবল ব্যক্তিগত লড়াই নয়; বরং বিএনপির অভ্যন্তরীণ ভোটব্যাংক বিভক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরি করবে। আবার উল্টোভাবে, এটি দলীয় প্রার্থীকেও আরও সক্রিয় ও মাঠমুখী হতে বাধ্য করতে পারে।

সব মিলিয়ে নেত্রকোনা-৩ আসনের নির্বাচন এখন আর শুধু দলীয় বনাম দলীয় প্রতিযোগিতা নয়; এটি হয়ে উঠেছে জনপ্রিয়তা বনাম সাংগঠনিক শক্তির লড়াই। দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলালের স্বতন্ত্র প্রার্থিতা চূড়ান্ত হলে এই আসনের নির্বাচনী রাজনীতি আরও জটিল ও বহুমাত্রিক রূপ নিতে পারে। শেষ পর্যন্ত এই রাজনৈতিক হিসাবের ফল নির্ধারণ করবে ভোটারদের সিদ্ধান্তই- যা জানা যাবে ব্যালট বাক্স খোলার দিন- এমন শঙ্কা ও ধারনা স্থানীয়দের মাঝে বিরাজ করছে।

এ প্রসঙ্গে আলহাজ্ব দেলোয়ার হোসেন ভুইয়া দুলাল বলেন, কেন্দুয়া ও আটপাড়া উপজেলার জনগণের স্বার্থে ও তাদের কথা বিবেচনা করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি। জনগণ কেউ কেউ বলে মরে যাবে, আবার কেউ কেউ বলে আত্মহত্যা করবে। জনগণ নিয়ে আমি দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করি। এক্ষেত্রে আমি জনগণের পালস্‌ ও জনগণের চাহিদাকেই আমি বিবেচনায় নিয়েছি।

অন্যদিকে আলহাজ্ব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী বলেন, প্রত্যাহারের সময় আছে। তিনি (দুলাল ভুঁইয়া) দলেরই লোক। এটা দলীভাবে আলাপ-আলোচনা করলে আশা করি প্রত্যাহার করে ফেলবে- এটা আমার বিশ্বাস। রাজনীতি করলে সবারই-তো চাওয়া পাওয়া থাকে। এমপি ছাড়াও তো আরো অনেক জায়গা আছে। মানুষকে সম্মানিত করার উপজেলা পরিষদ ও মেয়র আছে। এমপি পদ তো দল সবাইকে দিতে পারবে না। আলাপ আলোচনা করলে ইন্-শাল্লাহ সমাধান হয়ে যাবে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version