ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের বুদ্ধিজীবী সংগঠন ‘জিয়া পরিষদ’ একাডেমিক উৎকর্ষ সাধন, গবেষণা কার্যক্রম জোরদার এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিনির্ধারণী বিষয়ে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হলেও দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনটির কার্যক্রম স্থবির হয়ে রয়েছে। গত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলে সংগঠনটি কোনো কার্যক্রমই করতে পারেনি। ফ্যাসিস্ট পতনের পরে সুনির্দিষ্ট দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন ছাড়া তেমন কোন দৃশ্যমান কাজ করেনি সংগঠনটি।
জানা যায়, গণঅভ্যুত্থানের পর ২০২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সংগঠনটির নতুন কমিটি গঠিত হয়। এতে সভাপতি হিসেবে অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান খান এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম নির্বাচিত হন। গত ১৭ বছর কার্যকর কাজের পরিবেশ না থাকলেও নতুন নেতৃত্ব দায়িত্ব গ্রহণের পরও সংগঠনটির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান কার্যক্রম চোখে পড়েনি।
সংগঠনটির ঘোষিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়ন, জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশ, শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়ন, জনকল্যাণ ও দেশগঠন এবং রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার। তবে এসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সংগঠনটির কার্যকর কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সংক্রান্ত গবেষণাধর্মী কোন রকম প্রকাশনা, জার্নাল ও সভা-সেমিনারের আয়োজন করেনি সংগঠনটি।
সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান বলেন, “জিয়া পরিষদের ৫ আগস্টের পর কাজের পরিবেশ সৃষ্টি হলেও জিয়া পরিষদ সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয় ও অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ নিরসনে অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছি । জাতীয় বিভিন্ন ইভেন্ট ও সমসাময়িক ইস্যুতে আমরা বরাবরই সোচ্চার ছিলাম। তবে সংগঠনের মূল লক্ষ্য বুদ্ধিবৃত্তিক ও গবেষণাধর্মী কার্যক্রম প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাস্তবায়িত হয়নি। এ ধরনের কাজ মূলত সদস্যদের আগ্রহ ও উদ্যোগের ওপর নির্ভরশীল হলেও দুঃখজনকভাবে এ বিষয়ে সদস্যদের তেমন আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়নি। ফলে সংগঠনটি তার মূল লক্ষ্য অনুযায়ী কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। তবে ভবিষ্যতে সদস্যদের গবেষণাধর্মী কাজে আগ্রহী করে তুলতে আমি তাদের মোটিভেট করবো এবং এ লক্ষ্যে খুব শিগগিরই সদস্যদের নিয়ে একটি সভা আয়োজন করা হবে।”
জিয়া পরিষদের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন বলেন, “গত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট শাসনামলে সংগঠনটি কার্যকরভাবে কাজ করতে পারেনি। বর্তমানে কাজের পরিবেশ তৈরি হওয়ায় কিছু বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় স্মরনিকা বের করা হয়।তবে একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন হিসেবে যে ধরনের গবেষণা কার্যক্রম, বই ও জার্নাল প্রকাশ, কিংবা নিয়মিত সভা-সেমিনার আয়োজন প্রয়োজন সে অনুযায়ী কার্যক্রম এখনও দৃশ্যমান নয়।”


