নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলায় সুদের টাকা পরিশোধকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে পিস্তল দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যক্তি কেন্দুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগকারী হলেন- কেন্দুয়ার নওপাড়া ইউনিয়নে নওপাড়া (নদীরপাড়) গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে মো. ইনছান মিয়া (৪৮)।
আর অভিযোগে অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলার তারাকান্দা (নদীপুর) গ্রামের ফুল মিয়ার ছেলে মামুন (২৫) এবং তার বাবা ফুল মিয়া (৫৫) ও মা তারা বানু (৫০)।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কেন্দুয়া থানার ওসি মেহেদী মাকসুদের সাথে কথা হলে তিনি অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান।
অভিযোগে উল্লেখ করেন, ইনছান মিয়া স্থানীয় ফুল মিয়ার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা সুদে গ্রহণ করেন এবং নিয়ম অনুযায়ী প্রতি বছর ১৪ হাজার টাকা লাভ পরিশোধ করে আসছেন। চলতি বছরে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাভের টাকা পরিশোধ করতে দুই-তিন দিন সময় চাওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের সূত্রপাত হয়।
গত ১৬ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে ফুল মিয়ার ছেলে মামুন মোবাইল ফোনে ইনছান মিয়াকে নওপাড়া গ্রামের আছর উদ্দিনের দোকানের সামনে আসতে বলেন। সেখানে পৌঁছালে মামুন ইনছান মিয়াকে তার মাকে গালিগালাজ করার অভিযোগ এনে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তিনি কোমর থেকে একটি পিস্তল বের করে ইনছান মিয়াকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত স্থানীয় লোকজন পিস্তলটি প্রত্যক্ষ করেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
প্রত্যক্ষদর্শী রবিন (১৪) ও রওশনা (৫০) এর ভাষ্যমতে, জনসাধারণ এগিয়ে না এলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। যাওয়ার সময় অভিযুক্ত মামুন ভবিষ্যতে ইনছান মিয়াকে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
এ ঘটনায় বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান ইনছান মিয়া। তিনি বলেন, “ঘটনার পর থেকে আমি ও আমার পরিবার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। যেকোনো সময় আমার উপর হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি।”
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে হুমকি দেওয়ার ঘটনা এলাকায় চরম উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
এদিকে, এলাকায় প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শনের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
