রাত পোহালেই ১৪ ডিসেম্বর। শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস। আজকের (১৪ ডিসেম্বর) এই দিনে আমি শ্রদ্ধাবনতচিত্তে স্মরণ করছি মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের ও দু’লক্ষ মা-বোনদের, যাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা। আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি শহিদ বুদ্ধিজীবীদের, যাঁরা ১৯৭১ সালে বিজয়ের প্রাক্কালে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের দেশীয় দোসরদের হাতে নির্মমভাবে শাহাদত বরণ করেন। আমি তাঁদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করছি এবং তাদের শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।
দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ছিনিয়ে আনেন চূড়ান্ত বিজয়। ২৫ মার্চ ১৯৭১ কালরাত থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময়জুড়েই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদর-আল শামস বাহিনীর সহযোগিতায় বুদ্ধিজীবীদের বেছে বেছে হত্যা করে। পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা হাতে নির্মমভাবে হত্যা করে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান- শিক্ষক, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, শিল্পী, বিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদদের। বাংলাদশকে মেধাশূন্য করার এক নৃশংস ষড়যন্ত্র ছিল এটি। এ বিভীষিকাময় হত্যাযজ্ঞ আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল্য ও আত্মত্যাগের মহত্ত্ব নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়।
সারাদেশের ন্যায় নেত্রকোনা জেলাতেও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বহু গুণীজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বিজয়ের ৫৫ বছরের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সূর্যসন্তানদের হারানোর অপূরনীয় এই শোক আজও বুকে বয়ে চলেছে নেত্রকোণাবাসী।
আজকের এই দিনে তাই আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক- বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ, জ্ঞান ও পথকে অনুসরণ করে অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার। এর মাধ্যমেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।


