দুর্গাপুর (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি-
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে সোমেশ্বরী নদীর বুকে নির্মিত হয়েছে প্রায় ৮০০ মিটার দীর্ঘ বাঁশ-কাঠের অস্থায়ী একটি সেতু। সেতুটি চালু হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের যাতায়াতে নেমেছে স্বস্তির বাতাস। এতে নৌকায় পারাপারের দুর্ভোগ কমবে। শনিবার (২২ নভেম্বর) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়ে সেতুটি উদ্বোধন করেন।
ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেন্দ্রীয় বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণে অর্থায়ন করেন। জানা যায়, সেতুটিতে পায়ে হেঁটে পথচারী, শিক্ষার্থী, সাইকেল, রিকশা এবং জরুরি সেবার অ্যাম্বুলেন্স চলাচল সম্পূর্ণ টোল ফ্রি। গারো পাহাড়ের পাদদেশে ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে গড়ে ওঠা দুর্গাপুরের আয়তন ২৭৮ দশমিক ২৮ বর্গকিলোমিটার। এখানে প্রায় আড়াই লাখ মানুষের বসবাস।
কিন্তু পাহাড় থেকে নেমে আসা সোমেশ্বরী নদী পৌর শহর দিয়ে বয়ে তিনটি ইউনিয়নকে বিভাজন করেছে। এই ইউনিয়নগুলোর কুল্লাগড়া, গাঁওকান্দিয়া ও বিরিশিরি মানুষকে এই শিবগঞ্জ ফেরিঘাট দিয়ে নৌকায় পার হয়ে উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। বিশেষ করে শিবগঞ্জ ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ৭০ থেকে ৮০ হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। সেখানে স্থায়ী সেতু না থাকায় বর্ষার প্রায় ছয় মাস নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয়।
শুকনো মৌসুমে নদীর পানি কমে গেলে ধু-ধু বালুর ওপর দিয়ে হাঁটা কিংবা হাঁটুপানি পাড়ি দিয়ে নৌকায় উঠতে হয় যা ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। কখনও কখনও দূর্ঘটনাও ঘটে। স্থানীয়রা জানান, সোমেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত এই কাঠের সেতুটি দুর্গাপুরবাসীর দৈনন্দিন চলাচলে নতুন স্বস্তি এনে দিয়েছে। প্রতিদিন তেরীবাজার থেকে শিবগঞ্জ পর্যন্ত হাজারো পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও পর্যটক সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করবেন।
পর্যটনসমৃদ্ধ দুর্গাপুরে আগত ভ্রমণকারীদের জন্য এটি হবে আরও সহজ, নিরাপদ পথ। তবে তাদের দাবি-দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য এখানে একটি স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণ প্রয়োজন। স্কুলছাত্রী তাসফিয়া ইসরাত বলেন, নদীর ওপর সেতু না থাকায় প্রায় প্রতিদিনই স্কুলে যেতে আমাদের ভোগান্তি হতো।
এবারও ব্যারিস্টার কায়সার কামাল একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করেছেন এ জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের একটাই দাবি, সোমেশ্বরীর ওপর একটি স্থায়ী পাকা সেতু নির্মাণ হোক। ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এই সেতু দিয়ে প্রতিদিনই প্রায় ৮০ হাজার মানুষের পারাপার হয়। মানুষের কষ্ট সাময়িকের জন্য হলেও লাঘবের চেষ্টা করেছি।


