নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চলতি বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসের জন্য বরাদ্দকৃত ৫৬০ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য (চাল) কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। প্রতি মাসে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মোট ৯ হাজার ৪১৮ জন সুবিধাভোগীর কাছে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল পৌঁছানোর কথা থাকলেও কেউ সেই চাল পাননি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (খাদ্য কর্মকর্তা) কাওসার আহমেদের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে- তিনি ডিলারদের না জানিয়ে সমুদয় খাদ্যশস্য গোপনে কালোবাজারে বিক্রি করে দেন। বর্তমান বাজারদরে এই চালের মূল্য ২ কোটি টাকার বেশি হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
কেন্দুয়ার ১৩টি ইউনিয়নের ২৬ জন ডিলারের অনুকূলে আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে ২৮০ মেট্রিক টন করে মোট ৫৬০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু হতদরিদ্র সুবিধাভোগীদের বড় অংশই জানান, তাঁদের চাল দেওয়া হয়নি। অনেকে এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগ উঠার পর থেকে খাদ্য কর্মকর্তা ডিলারদের নিয়ে একাধিক বৈঠক করছেন। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ- তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার আনুষ্ঠানিক শুনানি শুরু করেছেন। প্রশাসনের একটি সূত্র জানায়, শুনানির একপর্যায়ে ইউএনও খাদ্য কর্মকর্তাকে কড়া সতর্কবার্তাও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ইউএনও বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে শুনানি চলছে। তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
যোগাযোগ করলে খাদ্য কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ স্বীকার করেন যে, আগস্ট মাসের চাল বিতরণে “কিছুটা অনিয়ম” হয়েছে। তবে কীভাবে অনিয়ম হয়েছে তা তিনি নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘ট্যাগ কর্মকর্তার উপস্থিতিতে চাল বিতরণ হওয়ার কথা। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।’ সেই সঙ্গে তিনি এই অনিয়ম গণমাধ্যমে প্রকাশ না করার অনুরোধও জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ডিলার জানান, তাঁরা বরাদ্দ সম্পর্কে জানতেন না। বরাদ্দকৃত চাল তাঁদের মাধ্যমে বিতরণ না করে কীভাবে বিক্রি হলো- এ বিষয়ে তাঁরাও বিস্মিত। অভিযোগ করেন, খাদ্য কর্মকর্তা তাঁদের কাছে ডিলারশিপ নবায়নের কথা বলে প্রতিজনের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নেন। একজন ডিলার বলেন, ‘আমরা কথা বলতে গেলেও বিপদে পড়তে হয়। কিন্তু এভাবে আমাদের অজান্তে চাল বিক্রি করে দেওয়া বড় ধরনের অনিয়ম।


