দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: ফেনীর ছাগলনাইয়ায় অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধারের পর পকেটে পাওয়া একটি ব্যাংক চেকের সূত্র ধরে বেরিয়ে আসে হারিয়ে যাওয়া এক জীবনের করুণ পরিসমাপ্তি। শনাক্ত হয় ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে অপহৃত কাস্টমস কর্মকর্তা আব্দুল আহাদের (৪৬) মরদেহ। পরিবারের দাবি, অপহরণের পর তখন মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দেয়ার পরও তাকে ফেরত পায়নি তারা। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, বুধবার, বুধবার (২৯শে অক্টোবর) সকালে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে অজ্ঞান অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়।

কর্তব্যরত চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের ওসি মো. আবুল বাশারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাৎক্ষণিক হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এ সময় মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশ তার সঙ্গে থাকা কাগজপত্র দেখতে গিয়ে উত্তরা ব্যাংক ফেনীর বিরিঞ্চি শাখার একটি চেক পান। চেকে হিসাবের নাম আব্দুল আহাদ উল্লেখ রয়েছে। পরে পুলিশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে হিসাব নম্বর জানালে তারা আব্দুল আহাদের পরিচয় নিশ্চিত করেন। ওসি মো. আবুল বাশার বলেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য অনুযায়ী নিহত আব্দুল আহাদ মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের ইমানী মিয়ার ছেলে বলে জানা যায়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

এদিকে নিহতের পরিচয় শনাক্তের পর স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দেয়। ফেনীতে ব্যাংক হিসাব কী করে খুললেন তা নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। পরে দিনভর নানা তথ্য যাচাই করলে বেরিয়ে আসে তার ফেনীতে আসার পেছনের গল্প। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নিহতের ছোট বোন নাঈমা নাসরিন মনির সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমার ভাই একসময় সিলেট ব্রিটানিকা উইমেন্স কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ছিলেন। পরবর্তীতে সিলেট বিমানবন্দরে কাস্টমসের অডিটর পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে চাকরি করেন। এরপর একইপদে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করেন।

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কর্তব্যরত অবস্থায় ২০১৯ সালের ১লা মে হঠাৎ তার মুঠোফোন বন্ধ পাই। পরে একটি নম্বর থেকে কল দিয়ে আমাদের জানানো হয় আব্দুল আহাদকে অপহরণ করা হয়েছে। বিকাশে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ পাঠালে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। তিনি বলেন, অপহরণকারীদের দাবি অনুযায়ী তখন আমরা দুই লাখ টাকা পাঠিয়েছি। এরপর তাদের নম্বরে যোগাযোগ করলেও বন্ধ পাই। অন্যদিকে আমার ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাইনি। পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার ছয় বছর পরও ভাইকে আর পাইনি। বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানতে পারি ফেনীর ছাগলনাইয়ায় আমার ভাইয়ের মরদেহ পাওয়া গেছে। একই প্রসঙ্গে কথা হয় নিহতের ভাগিনা মোস্তাফিজুর রহমান সাকিফের সঙ্গে।

তিনি বলেন, আমার মামার দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। ছোট মেয়ে গর্ভে থাকাকালীন তিনি নিখোঁজ হন। এর মাঝে ছেলের নিখোঁজের শোকে আমার নানা-নানি দুইজনই মারা গেছেন। দীর্ঘ ছয় বছর আমরা মামাকে খোঁজাখুঁজি করে পাইনি। তিনিও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। একটি স্বচ্ছল পরিবারের সন্তান আব্দুল আহাদকে অপহরণের পর থেকে তিনি পরিবার কিংবা স্বজনদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ না করার কারণ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। একইসঙ্গে তার এমন মৃত্যুকে রহস্যজনক বলেও মন্তব্য করেন মোস্তাফিজুর রহমান সাকিফ।

এ বিষয়ে জানতে নিহতের স্ত্রী মাহবুবা আক্তার সুমার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে আব্দুল আহাদের মরদেহ বুঝে নিতে তার বড় ভাই আব্দুল নুর বাড়ি থেকে ফেনীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন বলে জানান বোন নাঈমা নাসরিন মনি। আব্দুল আহাদের মরদেহ উদ্ধারের ব্যাপারে কথা হয় ছাগলনাইয়া থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক মো. শাহ আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, নিহতের শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হবার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version