রাজধানী হ্যানয় থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) উত্তরে অবস্থিত থাই নগুয়েন শহরে রেকর্ড বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যার পানিতে এখানকার বেশ কয়েকটি এলাকার রাস্তাঘাট ডুবে গেছে।
সরকার জানিয়েছে, এই সপ্তাহে প্রাকৃতিক দুর্যোগটিতে কমপক্ষে আট জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
রাজধানী হ্যানয় থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) উত্তরে থাই নগুয়েন শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভয়াবহ এই বন্যায় হাজার হাজার মানুষ বাড়িতে আটকা পড়েছে। কোন কোন এলাকায় বন্যার পানি গাড়ির উপর, এমনকি বাড়ির ছাদেও পৌঁছে গেছে।
দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার থেকে ভিয়েতনামের উত্তরাঞ্চলীয় পাহাড়ি এলাকায় আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে আট জন প্রাণ হারিয়েছে ও আরও পাঁচ জন নিখোঁজ হয়েছে।
আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত থাই নগুয়েন শহরের উপর দিয়ে প্রবাহিত কাউ নদীর পানি আগের রেকর্ড ২৮.৮১ মিটার (৯৪.৫ ফুট) উচ্চতার চেয়ে এক মিটারেরও বেশি বেশি ছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বরে টাইফুন ইয়াগির প্রভাবে ওই বন্যা দেখা দিয়েছিল। প্রলয়ঙ্করী ঝড়টি দেশটিকে প্রায় ধ্বংস করে দিয়েছিল।
থাই নগুয়েন, কাও ব্যাং ও ল্যাং সন প্রদেশের বাসিন্দারা আটকা পড়েছেন। তাদের আত্মীয়-স¦জন ও বন্ধুবান্ধবরা মঙ্গলবার ও বুধবার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাহায্যের জন্য আবেদন করেছে।
প্রদেশগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।
থোয়ান ভু অনলাইনে পোস্ট করেন, ‘আমাদের (থাই নগুয়েন প্রদেশে) নিচতলা সম্পূর্ণরূপে বন্যায় ডুবে গেছে। আমার বাবা-মা ও পাঁচ সন্তান আটকে আছে। এখানে পর্যাপ্ত খাবার ও পানির অভাব রয়েছে। মঙ্গলবারের শেষ থেকে কোনও যোগাযোগ নেই। আমাদের জরুরি সাহায্যের প্রয়োজন।’
তার মতো আরো বহু মানুষ এমন আবেদন জানিয়েছে।
টাইফুন মাতমোর প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতের পরে এই বন্যা দেখা দিয়েছে। ঝড়টি সোমবার ভিয়েতনামের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় দুর্বল হয়ে পড়েছিল, কিন্তু উত্তরে তীব্র আঘাত হানে।
টাইফুন বুয়ালোই ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি করার মাত্র এক সপ্তাহ পরে মাতমো ভূমিধসের সৃষ্টি করে। যার ফলে কমপক্ষে ৫৬ জন মারা যায় এবং ৭১০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়।
নগুয়েন প্রদেশে নগুয়েন ভ্যান নগুয়েন থাই তার তিনতলা বাড়ি থেকে এএফপিকে বলেন, ‘৬০ বছর আগে আমার জন্মের পর থেকে আমি কখনও এত ভয়াবহ বন্যা দেখিনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার রাস্তায় কখনও বন্যা হয়নি, কিন্তু এখন আমার নিচতলা সম্পূর্ণ ডুবে গেছে।’
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দুটি হেলিকপ্টার ব্যবহার করে চীন সীমান্তবর্তী ল্যাং সন প্রদেশের বন্যার্ত এলাকায় পানি, ইন্সট্যান্ট নুডলস, শুকনো কেক, দুধ ও লাইফজ্যাকেট ফেলে বন্যার্তদের সহায়তা করেছে।