দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি :

উজানের অতিভারি বৃষ্টির ঢলে তিস্তা নদীর পানি হু-হু করে বৃদ্ধি হচ্ছে ফলে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ভেন্ডাবাড়ি এলাকায় তিস্তা নদীর ডানতীরের প্রধান বাঁধ ও ১ নম্বর স্পার বাধ হুমকির মুখে পড়েছে। সুত্র মতে, বৃহস্পতিবার(১৮ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) উত্তরবঙ্গের পঞ্চগড়, নীলফামারী সহ ভারতের বিভিন্ন জেলায় অতিভারি বৃষ্টি হচ্ছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রাতভর বৃষ্টির মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশের পঞ্চগড় ও ভারতের জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কোচবিহার।

এদিকে অতিভারি বৃষ্টির জেরে উজানের ঢলে তিস্তা নদীর প্রবল স্রোতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে ফলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছচাঁপানী ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ি নামক স্থানে ডানতীর প্রধান বাঁধ ও ১৪০ ফিট দীর্ঘ একটি স্পার বাঁধ ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সেখানে নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে ভাঙ্গন রোধে জরুরী কাজ করছে। সচেতন মহল বলছেন অতিভারি বৃষ্টির দুর্যোগ ঝুঁকির মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে।

নীলফামারী ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পুর্বাভাস সর্তকীকরন কেন্দ্রের পানি পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, তিস্তা নদীর পানি শুক্রবার ডালিয়া পয়েন্টে সকাল ৯টায় বিপৎসীমার (৫২.১৫) দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। যা বেলা ১২টায় দশমিক ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার (৫২.০২) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও বেলা ৩টায় পুনরায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার দশমিক ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল এবং পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। তিনি জানান, তবে খবর পাওয়া গেছে উজানের ভারতের তিস্তা নদীর সীমান্ত মেখলিগঞ্জ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বেলা ২টায় বিপৎসীমার (৬৫.৯৫) দশমিক ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল সে পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি স্লুইচগেট খুলে রাখা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস সূত্র মতে, গত ২৪ ঘন্টায় পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় ২০২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল ৯টার পর থেকে উত্তরাঞ্চলের নীলফামারী,দিনাজপুর,রংপুর সহ বিভিন্ন স্থানে অতিভারি বৃষ্টি শুরু হয়। তবে সকাল ৯টার পূর্ব পর্যন্ত পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ২০২ মিলিমিটার, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ২৭ মিলিমিটার, দিনাজপুরে ৩ মিলিমিটার, রংপুরে ২ মিলিমিটার, নীলফামারীর ডালিয়ায় ১৪ মিলিমিটার বৃষ্টি পাত রেকর্ড করা হয়। এদিকে অতিভারি বৃষ্টি ও উজানের তীব্র স্রোতে তিস্তা নদী গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নে ভেন্ডাবাড়ি নামক স্থানে ১ নম্বর স্পার বাঁধে ধ্বস নেমেছে।

সেখানকার ডানতীরে প্রধান বাঁধটিঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সেখানে ভোর ৫টা থেকে ভাঙ্গনরোধে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা, এলাকার শ্রমিক ও জরুরীভিত্তিতে ঠিকাদার জিও ব্যাগ, জিও টিউব, বাঁশ ও গাছের গুড়ির পাইলিং করে ভাঙ্গনরোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারনে নীলফামারীর ডালিয়াসহ তিস্তা ব্যারেজের ভাটি এলাকা হুমকির মুখে পড়েছে। প্রতি নিয়ম নদী ডান তীরে সরে আসছে। এতে ওই বাধ বিধ্বস্থ হলে তিস্তা নদী মূল প্রবাহের গতিপথ ছেড়ে ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছচাঁপানী, জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়ন ও জলঢাকা শহর ছুঁয়ে প্রবাহিত পারে বলে ওই এলাকার বসবাসকৃত মানুষজন শঙ্কায় রয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, জুলাইয়ের শেষ দিকে ও আগস্টের শুরুতে তিন দফা পানি বৃদ্ধির পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়া-কমার মধ্যে রয়েছে। ফলে পানির স্তর বাড়া-কমার মধ্যে থাকায় চরাঞ্চল ও নিম্নভূমি প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীণ হতে হচ্ছে ওই এলাকার বসবাসরতদের। ঝুনাগাছ চাপানীর গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, বারবার বন্যায় ধান, পাট, মাছ সব নষ্ট হয়ে গেছে।

অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছি। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ছাড়া মুক্তি নেই। ভেন্ডাবাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল আলীম বলেন, তিস্তা নদীর পানি গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় সব থেকে বেশি আতঙ্কে রয়েছে ডানতীরের মানুষ। যদি বড় ধরণের বন্যা আসে তাহলে এক নিমিষে এই গ্রাম ভেসে নিয়ে যাবে।

তিনি জানান, রাতে পানি বৃদ্ধি হওয়ায় ভেন্ডাবাড়ি ডান তীরে ভাঙ্গন শুরু হয়। সকাল থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের চেষ্টা করছে। এতে স্থানীরাও সহযোগিতা করছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, সেখানে ১৪০ ফিট দীর্ঘ এক নম্বর স্পার বাঁধ ও ডান তীর প্রধান বাধ ঝুকির মধ্যে পড়েছে। হঠাৎ করে এখানে তিস্তা নদী ডান তীরে দিক পরিবর্তন করে সরে এসেছে। তিনি আরও জানান, নদীর তীব্র স্রোত আঘাত করছে এখানে। বৃষ্টির মাঝেই অসংখ্য শ্রমিক নিযুক্ত করে দ্রুত ভাঙ্গন মোকাবেলা করা হচ্ছে।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version