দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি :

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গ চলছে টানা বৃষ্টিপাত, ফলে গত দুইদিনের ভারী বৃষ্টিতে তিস্তার পানি আবারও বাড়ছে, সুত্র মতে উজানের ভারতের জলপাইগুড়ি, কোচবিহার থেকে মেখলিগঞ্জ ও বাংলাদেশের নীলফামারী ডালিয়া তিস্তা নদীতে পানি বাড়ছে, ১৪ সেপ্টেম্বর) রবিবার বেলা ১২টায় ভারতের মেখলিগঞ্জ পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। যা বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। অপর দিকে গত ৪৮ ঘন্টায় তিস্তায় ৩৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

পাশাপাশি রবিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত তিস্তা নদীর পানি নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে ৯ ঘন্টায় ১৩ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার (৫২.১৫) দশমিক ৯ সেন্টিমিটার (৫২.০৬) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। তবে যে কোন সময় তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। এতে করে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইচগেট খুলে রেখে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাগণ নজরদারী করা শুরু করেছে।

বর্তমানে তিস্তা অববাহিকায় কমলা সর্তকাবস্থা জারী করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ চৌধুরী। সুত্র মতে আগামী ২৪ ঘণ্টা তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে, তাই তিস্তা অববাহিকায় যে কোন সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করে সাধারণ বন্যা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। তিস্তা নদীর অববাহিকায় নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট- এই পাঁচ জেলার নিন্মাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

এদিকে তিস্তা নদী ফুঁসে উঠায় তিস্তাপাড়ের নিন্মাঞ্চল ও চরবেষ্টিত গ্রামে বসবাসকৃত কৃষক পরিবারের মাঝে চিন্তার ভাজ পড়েছে। গত আগষ্ট মাসের তিন দফায় তিস্তার বন্যায় এ সকল পরিবারের বোনা আমনধানের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পানি নেমে গেলে সেখানে তারা পুনরায় আমন চারা রোপন করেছে। এখন পুনরায় তিস্তায় বন্যাহানা দিলে কৃষক পরিবারগুলো পথে বসবে বলে মন্তব্য করেছেন তিস্তাপাড়ের টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন। তিনি বলেন গত দিন দফা বন্যায় আমার ইউনিয়ন এলাকায় ২০ হেক্টর আমন ক্ষেত সম্পূর্নক্ষতিগ্রস্থ হয়।

একই কথা জানালেন তিস্তাপাড়ের পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান। তিনি জানান, গত আগষ্ট মাসের তিন দফা বন্যায় তার এলাকায় ৫০ হেক্টর জমির আমন ধান চারা নস্ট হয়। এ ছাড়া খগাখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী,ঝুনাগাছ চাঁপানী এলাকায় ৫০ হেক্টর আমন ক্ষেত নস্ট হয়। সেখানে নতুন করে কৃষকরা চারা রোপন করেছে। এবার বন্যা হলে আর করার কিছুই থাকবে না। এদিকে বিভিন্ন সুত্র জানায়, তিস্তা নদীতে উজানের ভারী বৃষ্টি পাতের সাথে গোজলডোবা ব্যারাজ থেকে গত কয়েকদিনে দফায় দফায় পানি ছাড়া হচ্ছে।

বাংলাদেশের ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ থেকে উজানের জলপাইগুড়ি গোজলডোবা পর্যন্ত ১১০ কিলোমিটার । সেখান থেকে পানি ছাড়া হয়। এতে তিস্তা ভয়ংঙ্কর হয়ে উঠছে। সুত্র মতে গত তিন দিনে গোজলডোবা থেকে ছয় হাজার ,চার হাজার ৭০০ কিউসেক ও ১হাজার ৯ কিউসেক পানি ছাড়া হয়। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টায় পানি ছাড়া হয় ১ হাজার৭২৮ ও বেলা সারে ১১টায় পানি ছাড়া হয় আরও দুই হাজার কিউসেক। এ ভাবে দফায় দফায় পানি ছাড়া হচ্ছে বলে সুত্রটি নিশ্চিত করে। সুত্রমতে তিস্তা নদীর ভারতের মেখলিগঞ্জ পয়েন্টে বেলা ১২টায় বিপৎসীমার (৬৫.৯৫) ১৮ সেন্টিমিটার (৬৬.১৩) উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছি বলে খবরে বলা হয়। সেখানকার তিস্তায় লালসংকেত জারী করা হয়েছে।

এদিকে, বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, উজান থেকে গোজলডোবা থেকে ভারী বৃষ্টির সাথে বিপুল পরিমাণ পানি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে আগে থেকে বাংলাদেশকে কিছু জানানো হয়না। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন গোজলডোবা থেকে ভারত যে বাড়তি পানি ছেড়েছে, সে ব্যাপারে বাংলাদেশের কাছে অফিশিয়াল কোনও খবর নেই।

তবে ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরে বলা হয় গজলডোবা বাঁধ দিয়ে হঠাৎ করে এত বিপুল পরিমাণ পানি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সেচ দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মতো ভারতের জলপাইগুড়ি,দার্জিলিং কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার জেলায়ও গত তিনদিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে জলপাইগুড়ি দোমোহনি, মেখলিগঞ্জ থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রচুর পরিমান ভারী বৃস্টিপাতে পথঘাট তলিয়ে গেছে।

তিস্তা নদী সংলগ্ন সেখানে গত ২৪ ঘন্টায় জলপাইগুড়িতে ২২৮, দাজিলিং ১৯৯,কোচবিহারে ৩১১ ও আলিপুরদুয়ারে ৫৪০ মিলিমিটার বৃস্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এ ছাড়া সেখানে সকাল ৬টার পর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত চার ঘন্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় জলপাইগুড়িতে ৭৬,০৫ মিলিমিটার, দার্জিলিং এ ৫৪.০৭ মিলিমিটার,কোচবিহারে ৫৫.০১ মিলিমিটার ও আলিপুরদুয়ারে ১০৮.০৭ মিলিমিটার বৃস্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

ওই পানি নেমে আসার কারনে তার প্রভাব বাংলাদেশ অংশের তিস্তা অববাহিকায় হানা দিয়েছে। অপর দিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্র মতে তিস্তা অববাহিকার ডালিয়া পয়েন্টে ৩৮ মিলিমিটার, বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অপর দিকে আবহাওয়া অফিস সুত্র মতে নীলফামারীর ডিমলায় ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি পাত রেকর্ড করা হয়। সুত্র মতে আগামী ২৪ ঘণ্টা তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে, তাই তিস্তা অববাহিকায় যে কোন সময় বিপৎসীমা অতিক্রম করে সাধারণ বন্যা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version