গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলায় থানায় ঢুকে পুলিশকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে আটক হওয়া কলেজছাত্র সিজু মিয়ার পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) থেকে শুরু করে এএসআইসহ নামীয় ১৫ জন এবং ৫ জন অজ্ঞাতনামাসহ মোট ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) দুপুরের পরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নিহত সিজুর মা রিক্তা বেগম। আদালতের বিচারক পাঁপড়ি বড়ুয়া মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন সিআইডিকে। এজন্য ৬০ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৪ জুলাই বিকেলে গাইবান্ধা সাব রেজিস্ট্রি অফিস চত্বর থেকে সিজুকে সাঘাটা থানায় ডেকে আনা হয়। থানায় তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয় এবং মৃতপ্রায় অবস্থায় থানা সংলগ্ন একটি পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে পুকুরে নেমে লাঠি দিয়ে আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়। পরদিন সকালে পুলিশই ওই পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে এবং ঘটনাটি ভিন্নভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা করে। মামলায় নামযুক্ত আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদশা আলম, এএসআই রাকিবুল ইসলাম, এএসআই মশিউর, এএসআই মহসিন আলী সরকার, এএসআই আহসান হাবিব, এএসআই উজ্জল, এএসআই লিটন মিয়া (ডিউটি অফিসার) এবং পুলিশ সদস্য হামিদুল ইসলাম, আজাদুল ইসলাম, নয়ন চন্দ্র, জয় চন্দ্র, ধর্মচন্দ্র বর্মণ।
এছাড়াও স্থানীয় তিন যুবক সাব্বির হোসেন, ইউসুফ আলী ও মমিনুল ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, পুলিশের বরাত দিয়ে প্রথম দিকে প্রচার করা হয়েছিল যে, ২৪ জুলাই রাতে সাঘাটা থানায় ঢুকে এক এএসআইকে ছুরিকাঘাত করে সিজু। এরপর থানার পেছনের পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে পালান তিনি। তবে পরদিন তার মরদেহ উদ্ধার, নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এবং স্থানীয়দের তীব্র বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাটির নতুন রূপ নেয় ।
নিহত সিজু মিয়া (২৫) গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারি ইউনিয়নের বাগুরিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে ছিলেন। তিনি ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং গিদারি ইউনিয়ন ছাত্রশিবিরের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ঘটনাটি তদন্ত করতে ইতোমধ্যে রংপুর রেঞ্জের একটি তদন্ত দল গাইবান্ধায় কাজ করছে বলে জানা গেছে ।