ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ’র শ্বাসরোধে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রাতের সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার (৪ আগষ্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী রেজাউল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, শহীদ সাজিদ আব্দুল্লাহর নির্মম হত্যাকাণ্ডের রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সিসিটিভি ফুটেজ রহস্যজনকভাবে গায়েব হয়ে গেছে। এটি নিঃসন্দেহে হত্যার পেছনের চক্রান্তকারীদের রক্ষার অপচেষ্টা এবং পুরো বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার ইঙ্গিত বহন করে। এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার যে কোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে আমরা সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তুলব।আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিচ্ছি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল ফুটেজ গায়েব হওয়ার বিষয়ে স্পষ্ট বিবৃতি না দেয়, তাহলে আমরা আইসিটি সেল ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
শিক্ষার্থীরা জানান, ‘এই আন্দোলন শুধু সাজিদের নয়— এটি সমস্ত শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা ও ন্যায়ের প্রশ্ন। বিচারের পথ রুদ্ধ করার এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অবিচল ও আপসহীন।’
এদিকে এ বিষয়ে আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. শাহাজাহান আলী সাংবাদিকদের সামনে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘আমাদের সিস্টেমে কোন ডেটা লস নাই। সকল ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে আছে। টেকনিক্যাল প্রবলেম বা সফটওয়্যারের সমস্যার কারণে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিংস কমিটির ফুটেজে কোন সমস্যা হয়ে থাকতে পারে।’
এর আগে সাজিদ আব্দুল্লাহ’র হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন জানান, ‘১৬ জুলাই বিকাল ৫টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত আইসিটি নিয়ন্ত্রিত সিসিটিভি ফুটেজ পাইনি।’ এমতাজ হোসেনের বক্তব্যের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সিসিটিভি ফুটেজ গায়েবের বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে দায়ী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান।
উল্লেখ্য, ১৭ই জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর থেকে আল কুরআন বিভাগের ছাত্র সাজিদের লাশ উদ্ধার করা হয়। পরদিন ১৮ই জুলাই সকালে তার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। এছাড়া ভিসেরা রিপোর্টে সাজিদকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়। এই ঘটনার পর থেকে নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতসহ সাজিদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা।