দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

গোবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গোবিপ্রবি) ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠান ‘নবনীতক৯’-এর সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় চেয়ারে বসা নিয়ে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রাতভর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রক্টর ও হল প্রভোস্টসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে শেখ রাসেল হল, বিজয় দিবস হল ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে।

আজ বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় দিবস হলে দুই বিভাগের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষের সূচনা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত আনুমানিক ১টার দিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে র‍্যাগডে’র সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে চেয়ারে বসা নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে লাঠিসোটা, চেয়ারের পায়া, স্টাম্প, ব্যাট, হকিস্টিক, দেশীয় অস্ত্র ও জিআই পাইপসহ বিভিন্ন বস্তু ব্যবহার করা হয় বলে তারা জানান। দুই পক্ষের মধ্যে রাতভর হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে।

এ সময় ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকের নেতৃত্বে শেখ রাসেল হলে হামলা চালিয়ে বিভিন্ন কক্ষের জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয়। অন্য পক্ষ পাল্টা হামলা চালিয়ে এএসভিএম  বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকের কক্ষের আসবাবপত্র বাইরে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়াও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে।

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. আরিফুজ্জামান রাজীব, বিজয় দিবস হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক রবিউল ইসলাম, ফার্মেসি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওবায়দুল ইসলাম ও শাহিনুর রহমান এবং ইতিহাস বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাকসহ কয়েকজন সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আহত হন। এছাড়াও সংঘর্ষে দুই বিভাগের আরও অন্তত ১৫জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। রাতে ৭ শিক্ষার্থীকে রক্তাক্ত অবস্থায় গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মারামারির বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বলেন,“একাডেমিক ভবনে প্রোগ্রাম চলাকালীন সময়, আমাদের বিভাগের ২-৩ জন জুনিয়র সামনে চেয়ার নিয়ে বসতে যায়। তখন আমাদের অন্য জুনিয়ররা বলে— ‘ভাই, আপনি এমনি সামনে বসলে তো আমরা কিছু দেখতে পারি না।’ এ নিয়ে কথা-কাটাকাটি হয়। তবে তখনই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায়।

এরপর তারা ১০-১৫ জন একসাথে এসে আবার কথা বলতে চায়। তখন আমাদের জুনিয়রদের সঙ্গে ফের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওদের একজন আমাদের একজন জুনিয়রকে গালিগালাজ করে। তখন নিজেদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে প্রক্টর স্যার আসেন। আমি স্যারকে ফোন দিয়েছিলাম। বলেছিলাম— ‘স্যার, ঝামেলা হচ্ছে, মীমাংসা করে দিন।’

স্যার আসার আগেই ইইই (EEE) বিভাগের একজনের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়, তখন ওরা উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পরে প্রক্টর স্যার আমাদের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সকল শিক্ষার্থীকে লাইব্রেরির পাশের একাডেমিক ভবনের গেট দিয়ে বের করে দেন এবং গোল চত্বর পর্যন্ত এগিয়ে দেন।

এরপর আমরা সবাই রুমে যাওয়ার সময় হঠাৎ করে ৪০-৫০ জন ছেলে আমাদের ধাওয়া দেয়। আমরা দৌড়ে বিজয় দিবস হলে আশ্রয় নিই। কিন্তু ওরা বাঁশ ও কাঠ হাতে নিয়ে বিজয় দিবস হলে ঢুকে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের বিভাগের ৫-৬ জন শিক্ষার্থী আহত হন। হলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা মার খাওয়ার পর রাগান্বিত হয়ে হল থেকে বের হয় এবং শেখ রাসেল হলের দিকে যায়।”

তিনি আরও বলেন,“সেখানে পরিকল্পনা করে হলের শিক্ষার্থীদের আমাদের বিরুদ্ধে উস্কে দেওয়া হয়। তখন আমাদের বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী হলে গিয়ে ভাঙচুর করে। শফিক, নাহিদুর রহমান সাকিব এবং ইতিহাস বিভাগের নাহিদুল ইসলাম নাহিদ— যিনি এই ঘটনার কিছুই জানতেন না— তাঁর রুমে গিয়ে সব কিছু বাইরে ফেলে দেওয়া হয়। তাঁর ব্যক্তিগত বহু ডকুমেন্টস ছিল, যা তারা নষ্ট করে ফেলে।”

এরকম ঘটনা বারবার ঘটে যাচ্ছে , কিন্তু প্রশাসন কেন কার্যকারী পদক্ষেপ নিতে পারছে না কেন প্রশ্নের উত্তরে প্রক্টর আরিফুজ্জামান রাজীব বলেন,” এর আগে ম্যানেজমেন্ট এবং মার্কেটিং  এর মধ্যকার ঘটনায়  ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ছয়জন শিক্ষার্থী বহিষ্কার আছে। যার ভিতরে  দুইজন শিক্ষার্থী তিন সেমিষ্টার বহিষ্কার করা আছে।বাকিদের কে দুই সেমিষ্টার বহিষ্কার করা হয়েছে, পরে তাদের পিতা-মাতার অনুরোধে এক সেমিষ্টার করা হয়েছে। ইতিহাস বিভাগের ঘটনায় দুইজন শিক্ষার্থীকে তিন সেমিষ্টার করা হয়েছে এবং সাটিফিকেট বাজেয়াপ্ত করা এটা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা বানোয়াট, প্রশাসনকে বিভ্রান্ত এধরনের নিউজ করা হয়,বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম থেকে যে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয় না। আমি কোনো ঘটনার তদন্ত ছাড়া বিচার করি না, তদন্ত ছাড়া বিচার করলে মব জাস্টিস হয়,তখন খালি বিচার করতেই হবে। তদন্তের মাধ্যমে  বিচার করলে সবগুলোর বিচার হয়েছে।”

সংঘর্ষের ঘটনায় কি পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন,” হল প্রশাসনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যারা এধরনের কাজের সাথে জড়িত আছে তাদেরকে প্রশাসন সবাইকে সবোচ্চ শাস্তি যেটা আছে সেটা নিশ্চিত করবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আজকে মিটিং করে তিন কর্মদিবসের মধ্যে, সেখানে যেহেতু সিসিটিভি ফুটেজ আছে, সবকিছু আছে,আইউকনেস আছে,এ ঘটনার কারা জড়িত তাদের খুজে বের করা কঠিন কিছু না,তদন্তের মাধ্যমে  যাদের নাম উঠে আসবে সবাইকে কঠিন শাস্তির আওতায়  আনতে হবে,এটা ভাইস চ্যান্সেলরের ম্যাসেজ।

উল্লেখ্য, ‘নবনীতক৯’ শিরোনামে আয়োজিত শিক্ষা সমাপনী অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি আজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা সংঘর্ষের ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করেছেন। তারা সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সকল পক্ষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানিয়েছেন।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version