স্টাফ রিপোর্টার
সুনামগঞ্জ শহরের বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আনিসা হেলথ কেয়ার অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগী দেখানোর সিরিয়াল নিয়ে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান উদ্দিনসহ দুজন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুরে ক্লিনিক প্রাঙ্গণে এই ঘটনা ঘটে। পরে উভয় পক্ষ সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রায়হান উদ্দিন তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে আলট্রাসনোগ্রাফি করাতে আনিসা হেলথ কেয়ারে নিয়ে যান। সিরিয়াল অনুযায়ী দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও সেবা না পাওয়ায় আলট্রাসনোগ্রাফির দায়িত্বরত ব্যক্তি গোলাম রব্বানী সোহাগের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
একপর্যায়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে কলম দিয়ে আঘাত করলে হাতাহাতি শুরু হয়। আহত রায়হান উদ্দিন বলেন, “আমার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেছি। সিরিয়াল আগে থাকার পরও অন্য রোগীদের আগে সেবা দেওয়া হচ্ছিল। বিষয়টি জানতে চাইলে দায়িত্বরত ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাকে কলম দিয়ে আঘাত করে। পরে আমাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
এতে আমি আহত হই।” ঘটনায় রায়হান উদ্দিন ও ক্লিনিকের কর্মী গোলাম রব্বানী সোহাগ (৩৫) আহত হয়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এ বিষয়ে সেবা নিতে আসা অভিভাবক সুজন মিয়া বলেন, “এই ক্লিনিকে একজন পুরুষ চিকিৎসক নারী রোগীদের আলট্রাসনোগ্রাফি করেন, ওটি করেন, ছাড়পত্রও দেন—সবই একাই চালান। এতে যেমন গোপনীয়তা ক্ষুণ্ন হয়, তেমনি একধরনের অব্যবস্থাপনা ও হয়রানি রোগীরা সহ্য করেন। এই ক্লিনিকে আগে এক প্রসূতির মৃত্যুও হয়েছে চিকিৎসা অবহেলার কারণে।
সুনামগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক ও পৌর কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান উদ্দিন একজন দায়িত্ববান ব্যক্তি। তিনি তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে সেবা দিতে নিয়ে গিয়ে অপমানিত হয়েছেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন।
সম্প্রীতির শহর সুনামগঞ্জে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।” এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল কালাম বলেন, “ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে উভয় পক্ষের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” এ ঘটনার পর স্থানীয় সচেতন মহল ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। অনেকে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবার মান ও শৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।