জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল:
নড়াইলের লোহাগড়ায় চলতি বছরে এসএসসি পরিক্ষায় ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে ‘কৃষিশিক্ষায়’ অকৃতকার্য হয়েছেন লক্ষ্মীপাশা আদর্শ বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার শিক্ষার্থী মো. রোমান মোল্যা। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
শনিবার (১২ জুলাই) রাতে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। জানা যায়, উপজেলার লক্ষ্মীপাশা আদর্শ বিদ্যালয়ে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে কারিগরি শাখার (ইলেকট্রিক্যাল) শিক্ষার্থী মো. রোমান মোল্যা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। ১৫ বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ে অকৃতকার্য হন।
তবে ফলাফল সিট অনুযায়ী কৃষিশিক্ষায় ‘এ’ গ্রেড পান। ২০২৪ সালে অকৃতকার্য হওয়া ‘বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়’ বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সেবারও ওই বিষয়ে পাস করতে পারেননি তিনি। তবে যথারীতি কৃষিশিক্ষার ফলাফল ছিল অপরিবর্তিত। এদিকে ২০২৫ সালে রোমান আবারও একি বিষয়ে পরীক্ষা দেন। তবে এবার বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেয়া এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে তিনি ওই বিষয়ে পাস করলেও ‘কৃষিশিক্ষায়’ তাকে ফেল দেখিয়ে, সামগ্রিক ফলাফলে তাকে পাস দেখিয়ে গ্রেড পয়েন্ট এভারেজ (GPA) ৪.১৪ প্রকাশ করা হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী মো. রোমান মোল্যা মুঠোফোনে বলেন, আমি ২০২৫ সালে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়টিতে পরীক্ষা দেয়ার জন্য ফরম পূরণ করি এবং টাকা জমা দিয়েছিলাম। পরে আমি শুধুমাত্র ওই বিষয়টিতে পরীক্ষাও দিয়েছি। বোর্ডের দেয়া ফলাফলে আমি ওই বিষয়ে এ মাইনাস (A-) পেয়েছি।
কিন্তু কৃষিশিক্ষায় আমাকে ফেল দেখানো হচ্ছে। আমি তো কৃষিশিক্ষায় পরীক্ষাই দেয়নি। প্রথমে রেজাল্ট সিট দেখে কিছু বুঝতে না পারলেও পরে বিষয়টি দেখতে পাই। তিনি জানান মানসিকভাবে চাপে আছি, স্যারদের সাথে যোগাযোগ করছি কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন স্পষ্ট ধারনা পাইনি বলে জানান এই শিক্ষার্থী। এদিকে এ ফলাফল নিয়ে জনমনে দেখা দিয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। টিপু সুলতান নামের এক ব্যক্তি বলেন, যে শিক্ষার্থী একটা বিষয়ে পরীক্ষা দেননি। তিন্তু সে বিষয়ে অকৃতকার্য কেমন করে হয়? এটা স্পষ্ট বোর্ডের গাফিলতি।
আর অন্য কোন বিষয় থেকে থাকলে বোর্ডের সেটার জানানো উচিত। এ বিষয়ে লক্ষ্মীপাশা আদর্শ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম মুরাদুজ্জামান বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। শিক্ষার্থীর ফলাফলের বিষয়টি নিয়ে বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করে সমাধানের চেষ্টা করা হবে।
তবে ধারণা করছি, এটা দায়িত্বরত ব্যক্তির টাইপিং মিসটেক হতে পারে। তিন বছর আগে বোর্ড থেকে জানানো হয়েছিল কোন শিক্ষার্থী কোন বিষয়ে ফেল করলে চতুর্থ বিষয়ে যদি পাস করে, পরবর্তী বছরে ফেল করা বিষয়ে পুনরায় পরীক্ষা দিয়ে পাস করলে ও চতুর্থ বিষয়ের ফলাফল যোগ হবে না। তবে পাস করার পরও মার্কসিটে ফেল দেয়ার কথা নয়।