দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল :

রোদে পাকা ফলের গন্ধে ভরে থাকে চারপাশ। দর্শনার্থীদের কাছে যেন এক স্বপ্নপুরী। তাই ছবি তুলতে, ঘুরতে কিংবা নিছক ফলের গন্ধ নিতে প্রতিদিনই এখানে ভিড় করেন অনেকে। নানা ফুল-ফলের সমারোহ থাকলেও সবচেয়ে বেশি নজর কাড়ে আমগাছগুলো। এ চিত্র নড়াইল শহর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার মুলিয়া ইউনিয়নের বনগ্রামের ‘মাহিন কানন-২’ নামের এক বাগানে।

বৈচিত্র্যময় ও বিরল জাতের আমগাছের চাষ করে সাড়া ফেলেছেন নড়াইলে শহরের স্বনামধন্য ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর কবির। নড়াইল সদর উপজেলার বনগ্রামে ‘মাহিন কানন-২’ নামের এক বাগানে দেখা মিলছে দেশি-বিদেশি ৫০ প্রজাতির দুর্লভ আম। মূলত শখ থেকেই ২০২১ সালে এই বাগান গড়ে তোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাহাঙ্গীরের কবীর। জাপানে থাকা তার ছোট বোন কাকলি ঠাকুরের আর্থিক সহযোগিতায় দুই ভাই-বোন মিলে চার একর জমিতে গড়ে তুলেছে এই বাগান।  সরেজমিনে মাহিন কানন বাগানে ঢুকতেই চোখে পড়ে সারি সারি আমগাছ। প্রতিটি ডালে ঝুলছে বাহারি আম।

কোনোটি গাঢ় লাল, যেন পাকা কাশ্মীরি আপেল। কোনোটার ওপরে হালকা লাল, নিচে সবুজ। কোনোটি আবার ম্লান হলুদ, চোখে লাগার মতো মোলায়েম। আবার কোনোটি বেগুনি-সবুজে ছোপ ছোপ, মনে হয় যেন হাতে আঁকা। বাগানটি মালিক জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, পরিবারের সকলের উৎসাহে জাপান প্রবাসী বোনের সহযোগিতায় বাগানটি গড়ে তুলেছেন তিনি। বাগানের নামকরণ ও করেছেন বোনের ছেলের নামে। বাগানটি দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে লোক এসে তাঁকে উৎসাহ দেয়। বিষয়টি দারুণ উপভোগ করেন তিনি। শহরে ঠিকাদারি করলেও সবসময় তাঁর মন পড়ে থাকে মাহিন কাননে।

ভবিষ্যতে বাগানটি আরো সুন্দর করে সাজাতে চান তিনি। এই বাগানটিতে রয়েছে, ‘জাপানের বিখ্যাত “মিয়াজাকি”, থাইল্যান্ডের “চিয়াংমাই”, “ডকমাই”, “কিউজাই”, “ব্যানানা ম্যাংগো”, চীনের “জিন হুয়াং”, আমেরিকার “সুপার ক্যান্ট” ও “আমেরিকান বিউটি” জাতের পাশাপাশি দেশি হিমসাগর, কাঁচামিঠা, বারী-৮, বারী-১৩, ল্যাংড়া, আম্রপালি সহ দেশি- বিদেশি ৫০ প্রকারের  আম গাছ রয়েছে তাঁদের বাগানে।

রয়েছে ব্যতিক্রম “থ্রি টেস্ট”যে এক আমে পাওয়া যায় তিন ধরনের স্বাদ। প্রায় প্রতিটি গাছেই এবার আম ধরেছে। এসব আমগাছের কিছু বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল এবং কিছু সংগ্রহ করা হয়েছে বিদেশ থেকে।’ শুধু অর্ধশতাধিক প্রজাতির আমই নয়, বাগানে আপেল, আঙুর, কাঁঠাল, প্রজাতির,কদবেল, ড্রাগনসহ আরো বিভিন্ন প্রজাতির ফলের চাষ হচ্ছে। এছাড়া নানা জাতের ফুলগাছও রয়েছে।

সেখান কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে চারজন শ্রমিকের। দিনভর গাছের যত্নে সময় কাটে তাদের। সার্বক্ষণিক বাগানে কাজ করে যে অর্থ পান, তা দিয়ে ভালোই চলছে তাদের। শখের এই বাগান শুধু চোখের আরাম নয়, হয়েছে শ্রমিকদের জীবিকার উৎসও। বাগানটি পরিচালনার জন্য স্থায়ীভাবে নিয়োজিত আছেন চারজন শ্রমিক।

বাগানের কর্মরত শ্রমিক সুজিত বাগচী ও অজয় বিশ্বাস বলেন, চার বছর আগে যখন বাগানের কার্যক্রম শুরু হয়, তখন থেকে গাছগাছালির পরিচর্যায় এখানে কাজ করছেন তাঁরা। প্রতিদিন তাঁরা ৭০০ টাকা করে পারিশ্রমিক পান। এই আয়েই চলে তাঁদের সংসার। এদিকে বাহারি জাতের নানা রঙের আম দেখতে সেখানে নিয়মিত ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।

এতো প্রজাতির আম দেখে খুশি তারা। শহর থেকে বাগান দেখতে আসা কলেজছাত্র রাজু শেখ বলেন, “পৃথিবীতে যে এত প্রকারের আমগাছ রয়েছে, তা না এলে বিশ্বাসই করতাম না। এই আমগুলোর যেমন ব্যতিক্রমধর্মী নাম, তেমনি চোখ জুড়ানো রং। এক কথায় অসাধারণ।” নড়াইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ সৌমিত্র সরকার বলেন, মাহিন কানন নামে ওই বাগানটিতে বারোমাসিসহ দেশি-বিদেশি নানা জাতের আমের চাষ হচ্ছে। আমরা বাগান মালিককে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি৷

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version