ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ‘আল ফিকহ্ অ্যান্ড ল’ করার দাবিতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৭ মে) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে বিভাগের মূল ফটক আটকে এই কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
এর আগে দুপুর দেড়টায় বিভাগের সভাপতির কক্ষে এ বিষয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রায় দুই ঘন্টা আলোচনা হয়। আলোচনায় কোনো সমাধান না হওয়ায় দাবি আদায়ে বিভাগের সামনে অবস্থান নেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, আগামী একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে বিভাগের নাম পরিবর্তনের বিষয়টি তুলতে হবে।
জানা গেছে, বিভাগটি চালুর পর থেকে বিভাগের নাম ছিল আল ফিকহ্। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ফিকহের সাথে `ল’ যুক্ত করার দাবি তোলেন। দাবি মানা হলেও বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে তৎকালীন আওয়ামী প্রশাসন `ল’ এর পরিবর্তে লিগ্যাল স্টাডিজ যুক্ত করে `আল ফিকহ্ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ’ নামকরণ করেন। এই বিভাগকে দমিয়ে রাখার জন্যই এমন ষড়যন্ত্র করা হয় বলে মনে করেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের দাবি একটাই। বিভাগের নামের সংস্কার চাই। বাংলাদেশের এলএলবি ডিগ্রী প্রদানকারী কোনো প্রতিষ্ঠানে বিভাগের নাম লিগ্যাল স্টাডিজ নেই। আমরা পরিচয়হীতায় ভুগছি। সাধারণভাবে এই নাম কেউ চিনেনা আবার অনেকে ইসলামিক স্টাডিজ মনে করে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর শিক্ষকদের নিকট আমরা দাবি জানালেও তার কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ এখনো নেওয়া হয়নি। আমাদের দাবি আগামী একাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে বিভাগের নাম সংস্কার করে `আল ফিকহ্ অ্যান্ড ল’ করা হোক। অন্যথায় আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, আমি এ বিষয়ে অনেক আগে থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। বিভাগের কোনো বিষয় সিন্ডিকেট মিটিয়ে পাঠাতে হলে সকল শিক্ষক ঐক্যমত থাকতে হয়। কিছুদিন আগে আমি এই বিষয়ে সবাইকে ডাকলেও কয়েকজন শিক্ষক এতে সাড়া দেননি। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের পূর্বের দাবিতে দুটি নামের কথা উল্লেখ থাকায় কয়েকজন শিক্ষক দ্বিমত পোষণ করেন। ফলে তা আর আগোনো সম্ভব হয়নি। এবার শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে একমত এবং বিভাগের নাম `আল ফিকহ্ অ্যান্ড ল’ করার দাবি জানিয়েছে। আশাকরি এবার তা সংস্কার করা সহজ হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের চাওয়া অনুযায়ী আসন্ন একাডেমিক কাউন্সিল সভায় নাম সংস্কারের বিষয়টি উত্থাপন করবো। আগামীকালই এ বিষয়ে রেজুলেশন করা হবে। আমরাও বিভাগের নাম সংস্কার চাই।
প্রসঙ্গত, বিভাগটি চালুর পর থেকে বিভাগের নাম ছিল আল-ফিকহ। কিন্তু বিভাগটি আইন অনুষদভুক্ত হওয়ায় এবং এলএলবি ডিগ্রি প্রদান করায় পরবর্তীতে ২০১৭ সালে শিক্ষার্থীরা ফিকহের সঙ্গে ‘ল’ যুক্ত করার দাবি তোলেন। সেসময় দাবি মানা হলেও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তৎকালীন আওয়ামী প্রশাসন ‘ল’ এর পরিবর্তে বিভাগের নামের শেষে ‘লিগ্যাল স্টাডিজ’ যুক্ত করে ‘আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ’ নামকরণ করেন। এই বিভাগকে দমিয়ে রাখার জন্যই সেসময় এমন ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলে অভিযোগ বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।