নিজস্ব প্রতিবেদক: বিধবা গার্মেন্টস কর্মী কমলা খাতুন হত্যা মামলায় পরকীয়া প্রেমিক নিজাম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছেন নেত্রকোনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি নিজাম উদ্দিন নেত্রকোনা পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া গ্রামের মো. চাঁন মিয়ার ছেলে।
রবিবার (৪ এপ্রিল) সন্দেহাতীতভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান তাঁর রায়ে মৃত্যুদন্ডের পাশাপাশি আসামি নিজাম উদ্দিনকে আরো ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও প্রদান করেন।
এদিকে মামলা বাদী নিজাম উদ্দিন ও সাজাপ্রাপ্ত আসামি নিজাম উদ্দিন দুজনেরই নাম একই হলে দুজনের বাড়ি নেত্রকোনার ভিন্ন উপজেলায়।
জানা যায়, নেত্রকোনা দুর্গাপুর উপজেলার ভুক্তভোগী কমলা খাতুনের ভাই নিজাম উদ্দিন পূর্বধলা থানায় মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন, তারা তিন ভাই ও দুই বোন। ছোট বোন কমলা খাতুনকে বিয়ের দেওয়ার পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধের কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর কমলা খাতুন গাজীপুরের টঙ্গী মিরা বাজার এলাকায় আরেক ছোট বোন চম্পা খাতুনের কাছে গিয়ে দুই বোন একত্রে গার্মেন্টেস করতেন। মাঝে মধ্যে কমলা খাতুন বাড়িতে আসতেন। সর্বশেষ ২০২২ সালে বাড়িতে আসেন এবং কোরবানী ঈদ শেষে ফিরে যান। মাঝে মধ্যে বোনের সাতে ফোনে কথা হতো মামলার বাদী নিজাম উদ্দিনের।
২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর বেলা ৩টার দিকে পুলিশের মাধ্যমে বাদী (কমলা খাতুনের ভাই) খবর পান তার বোন কমলা খাতুনের মৃতদেহ পূর্বধলার খলিসাউড়া গ্রামের পাবই দাসপাড়া বালুচড়া বাজারের দক্ষিণ পার্শ্বে পাকার রাস্তা কাছে পাওয়া গেছে। বাদী তার আত্মীয়-স্বজন সহকারে নেত্রকোনা সদর হাসপাতাল মর্গে বোনের লাশ সনাক্ত করেন এবং কলমা খাতুনের পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ভুড়ি বাহির হওয়া অবস্থায় দেখতে পান।
এরপর বাদী নিজাম উদ্দিন গাজীপুরে থাকা আরেক বোন চম্পার সাথে ফোনের যোগাযোগ করলে জানতে পরেন কমলা খাতুন ১৮ নভেম্বর ২০২২ খ্রি. বিকেল আনুমানিক ৪টার দিকে টঙ্গী মিল গেট এলাকায় বসবাসরত ভাতিজা মামুদের বাসায় যাবে বলে বাসা থেকে বের হয়েছে এবং বাসায় ফিরে নাই। পরে চম্পা তার ভাইকে আরো জানায়, তাদের বাসার সাথে বাসা একজনকে দুলাভাই বলে ডাকতো কমলা। তাকে (দুলাভাই) খবরটি জানানোর জন্য পাশের বাসায় গেলে চম্পা বাসাটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। ভুক্তভোগী পরিবারের সকলের ধারণা ২০২২ সালের ১৮ নভেম্বর বিকলে ৪টার হতে পরেরদিন ১৯ নভেম্বর সকাল ১০টার যেকোন সময়ে কমলা খাতুনকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় পুলিশি তদন্তে কমলা খাতুনের সাথে পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া গ্রামের নিজাম উদ্দিনের পরকীয়ার সম্পৃক্ততা খুঁজে পান। পাশের বাসার কথিত দুলাভাই হলেন নিজাম উদ্দিন। বিয়ের জন্য চাপ দিলে সুকৌশলে এই হত্যাকন্ড সংগঠিত করেন নিজাম উদ্দিন।