আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় ২০২৫ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশার তুলনায় অনেক কম হবে। বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা, অনিশ্চয়তা এবং আঞ্চলিক সংঘাতকে দায়ী করেছে সংস্থাটি।
দুবাই থেকে এএফপি জানায়, আইএমএফ-এর আঞ্চলিক প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ ও ২০২৬ সালে প্রবৃদ্ধি বাড়বে বটে, তবে গত অক্টোবরের পূর্বাভাসের তুলনায় তা হবে অনেক মন্থর।’
২০২৫ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২.৬ শতাংশ এবং ২০২৬ সালের জন্য ৪.২ থেকে ৩.৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে।
বৈশ্বিক শুল্ক যুদ্ধ, ধীরগতির তেল উৎপাদন পুনরুদ্ধার, সংঘাতের প্রভাব এবং কাঠামোগত সংস্কারে ধীরগতি—এসবই এই পূর্বাভাস হ্রাসের পেছনে ভূমিকা রেখেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্কনীতির সরাসরি প্রভাব এই অঞ্চলে পড়বে না বলে মনে করছে আইএমএফ।
সংস্থাটির মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া বিভাগের পরিচালক জিহাদ আজউর বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক সংযুক্তি সীমিত, এবং জ্বালানি খাত শুল্ক থেকে মুক্ত।’
তবুও বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা বিনিয়োগ, আর্থিক বাজার এবং তেলের দামে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
২০২৪ সালে এ অঞ্চলের গড় প্রবৃদ্ধি কমে দাঁড়িয়েছে ১.৮ শতাংশ, যা ২০২৩ সালে ছিল ২.১ শতাংশ। এর জন্য চলমান সংঘাত এবং তেল উৎপাদনে স্বেচ্ছা হ্রাসকেই দায়ী করা হয়েছে।
তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর ২০২৫ সালের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আগের তুলনায় ১.৭ শতাংশ পয়েন্ট কমানো হয়েছে। এদের মধ্যেও ব্যবধান রয়েছে—খুব ধনী উপসাগরীয় দেশগুলোয় প্রবৃদ্ধির হার ৩ শতাংশ, আর ইরাকে প্রত্যাশিত হ্রাস ১.৫ শতাংশ।
সুদান, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত হতাশাজনক। ২০২১ সালের পর থেকে আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রায় ২৫ শতাংশ কমে গেছে, যা ভবিষ্যতে আরও হ্রাস পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
লেবানন ও সিরিয়ার জন্য আলাদা পূর্বাভাস প্রকাশ করেনি আইএমএফ। তবে আইএমএফ জানিয়েছে, ‘প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক সংস্কার বাস্তবায়ন করতে পারলে পুনর্গঠনের মাধ্যমে এই দেশগুলো ঘুরে দাঁড়াতে পারে।’
জিহাদ আজউর বলেন, ‘উপসাগরীয় দেশগুলো সহায়তায় আগ্রহী, তবে বিশ্বাস পুনর্গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে।’