দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আমার মূল এজেন্ডা তিনটি। গুণগত শিক্ষা, মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ও পরিবেশের উন্নয়ন। এ লক্ষ্যেই আমরা এখন কাজ করছি।

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে উপদেষ্টার ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে আমি ওই অঞ্চলের প্রতিটি কর্নারে গিয়েছি। মানুষের অবস্থা জানতে চেয়েছি। প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর অবস্থা জানার চেষ্টা করেছি। প্রত্যেকের প্রয়োজনীয়তাগুলো জানতে চেয়েছি। আমার মনে হয়েছে ওই অঞ্চলের লিডারদের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে। খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও রাঙ্গামাটিতে কোথায় কী প্রয়োজন এসব কিছু একজন লিডার এর জানা প্রয়োজন। জেলা পরিষদ ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোতে কিছু যোগ্য লিডার আছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে সরকার অনেক টাকা পয়সা দিচ্ছে। কিন্তু আমরা সামষ্টিকভাবে কিছু করতে পারছি না। সরকারি অফিসগুলো সামষ্টিকভাবে কিছু করতে পারছে না। সরকারের অনেক টাকা ওই অঞ্চলে গেছে কিন্তু উন্নয়নটা সেভাবে হয়নি।

পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীগুলোর জন্য গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সব সময় চিন্তা ছিল পার্বত্য চট্টগ্রামে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করা। আমাদের প্রতিযোগিতায় আসতে হবে। কেননা সব সময় তো আর আমাদের কোটা থাকবে না। এই প্রতিযোগিতায় আসতে হলে আমাদের কিছু ভালো স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমার চিন্তা হলো— স্যাটেলাইট এডুকেশন। এটা করতে হলে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে হোস্টেল তৈরি করতে হবে। ক্লাস থ্রি-ফোর পর্যন্ত পড়ালেখা শেষে বাচ্চারা উপজেলার হোস্টেলে এসে পড়ালেখা করবে ক্লাস এইট পর্যন্ত। এরপর ইন্টামেডিয়েট (উচ্চ মাধ্যমিক) পর্যন্ত পড়বে জেলার হোস্টেলে থেকে। এ জন্য আমাদের উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কিছু ভালো স্কুল করতে হবে। তারা যদি এসব স্কুলগুলোতে থেকে পড়ালেখা করতে পারে তবে তারা যেকোনো পর্যায়ে প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত হবে। আমি যখন উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলাম সেসময় পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় ৪০টি হোস্টেল তৈরির কথা বলেছিলাম। এগুলো হবে কিনা জানি না।

তিনি আরও বলেন, গুণগত শিক্ষা ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে আমার আরও দুটি এজেন্ডা আছে। ওই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও পরিবেশের উন্নয়ন। আমাদের টি-আর সব নারীদের দিচ্ছি। আমার চিন্তা হলো-নারীদের ক্ষমতায়ন করা গেলে পরিবারের সক্ষমতা বাড়বে। পরিবারের সক্ষমতা বাড়লে তাদের সন্তানদের পড়ালেখা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পাহাড়ের সকল জাতিগোষ্ঠীর ক্যাপাসিটি এক না। এদের প্রত্যেককেই ছোট-বড় সহযোগিতার মাধ্যমে উঠিয়ে নিয়ে আসতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, আমার তৃতীয় এজেন্ডা পাহাড়ের পরিবেশের উন্নয়ন। পাহাড়ে যত্রতত্র বাড়িঘর তৈরি হচ্ছে। আমি এটার পক্ষে না। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, পাহাড়ের বড় নদীগুলোতে পানির পরিমাণ কমে গেছে। আমাদের বনভূমি রক্ষা করতে হবে। এ জন্য পানি সংরক্ষণ করে রাখে এমন গাছ লাগাতে হবে। তবেই আমাদের বন আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামকে পর্যটন আকর্ষণীয় করা ও নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, এই অঞ্চলে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার অনেক কিছু আছে কিন্তু সিকিউরিটির অভাব আছে। এগুলো একদিনে হবে না। প্রতিনিয়ত কাজ করে যেতে হবে। পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন হলে পার্বত্য এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নও হবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি বন্ধের বিষয়ে তিনি বলেন, দিনদিন আমাদের উন্নয়ন হচ্ছে। আমাদের বাহিনীগুলোও অনেক অবদান রাখছে। কিন্তু নিরাপত্তা নিয়ে এখনো আমাদের কিছু অসুবিধা রয়ে গেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। আমার চিন্তা হলো- চাঁদাবাজি করা লোকদের যদি আমরা চাকরি ব্যবস্থা করার মাধ্যমে পুনর্বাসন করতে পারি তবে আশা করা যায় ওই অসুবিধাটা কমে যাবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়নের মূল প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়নের জন্য সকল দরজা খুলে রাখছে। কিন্তু মূল সমস্যা হলো- আমাদের লোকেরা জানে না কোথায় কোন সুবিধা নিতে হবে। পার্বত্য অঞ্চলে সবচেয়ে ভালো করেছে কৃষি বিভাগ। দেখা গেছে, গাছ লাগিয়েছে পানিও দিচ্ছে কিন্তু গাছে ফল দিচ্ছে না। এটা তো একটা সমস্যা। এর সমাধান কিন্তু কৃষি অফিসে গেলেই পাওয়া যাবে। কিন্তু তারা এটা জানেই না। এজন্য পাহাড়িদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমার লোকেরা নিজেরাই জানে না কোথায় কী চাইতে হবে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, এছাড়া ওই অঞ্চলে অনেক হস্তশিল্প আছে। যেটা তারা কাপড় হিসেবে বিক্রি করে একশো টাকায়। কিন্তু ওইটা ড্রেস হিসেবে বিক্রি করলে হবে সাত শত টাকা। এ জিনিসটাই আমরা তাদের বুঝাতে চেষ্টা করছি। পার্বত্য চট্টগ্রামে আমার একটি প্রজেক্ট চলছে। সেখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ৬০-৭০ জন মহিলা কাজ করছেন। তাদের মাধ্যমে কাপড় উৎপাদন করে তা বাজারজাত কীভাবে করা যায় সে চেষ্টা আমরা করছি।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version