নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রেমিকের সঙ্গে তিন-মাস মাস আগে ইমোতে কথোপকথনের মাধ্যমে প্রেমিকা (১৭) পরিচয় হয়। তারপর থেকে নিয়মিত যোগাযোগ। প্রেমিকাকে বিয়ের প্রলোভনে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ শহরের আলোকদিয়া সেতুর ওপর ডেকে আনেন প্রেমিক। সেখান থেকে প্রেমিক ও তার এক বন্ধু মোটরসাইকেলযোগে প্রেমিকাকে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার নিজগাবী গ্রামের সামনের হাওরে নিয়ে যান। সেখানে প্রেমিকের আরেক বন্ধুসহ তিনজনের পালাক্রমে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন প্রেমিকা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরের এ ঘটনায় প্রেমিকসহ তিন অভিযুক্তকে আদালতের প্রেরণ করেছে মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ। একই দিন ভোরে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার নিজগাবী গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার নিজগাবী গ্রামের মো. শাহজাহান মেম্বারের ছেলে আজিজুল ইসলাম (১৮), একই গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে মো. রফিক (২৪) ও মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে মো. সাকিব মিয়া (২৬)। তারা সবাই রাজমিস্ত্রীর পেশায় নিয়োজিত।
ভুক্তভোগী প্রেমিকা (কিশোরী) মোহনগঞ্জ পৌরশহরের একটি গ্রামের বাসিন্দা। কিছুদিন মাদরাসায় পড়াশোনা শেষ না করে বাড়িতেই থাকতেন।
জানা যায়, গত ১৬ই এপ্রিল রাতে ধর্ষণের সময় মোবাইলে ফোনে ভিডিও ধারণ করেন অভিযুক্তরা। কিছুক্ষণ পর প্রেমিকের আরেক বন্ধু সাকিব উপস্থিত হন এবং সাকিবও কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এভাবে পর্যায়ক্রমে রাতভর ধর্ষণ শেষে ভোরে ওই কিশোরীকে তার বাড়ির সামনে ফেলে যান ওই তিন অভিযুক্ত। যাবার সময় ধর্ষণের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য তারা ওই কিশোরীকে শাসিয়ে যান তারা।
এদিকে ভয়ে ঘটনা চেপে থাকেন ভুক্তভোগী প্রেমিকা। শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের কাছে বিষয়টি খুলে বলেন। ঘটনা শোনে গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রাতে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী কিশোরীর বড় ভাই। অভিযোগ পেয়ে ভোরে অভিযান চালিয়ে ওই তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েই দ্রুত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করেছি। অভিযুক্তরা জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণ ও ধর্ষণের ঘটনা ভিডিও করার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাইয়ের করা মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আজ (বুধবার) দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, মধ্যরাত থেকেই তাদের ধরতে অভিযান শুরু করি। শুধুমাত্র আজিজুলের মোবাইল নাম্বার আমাদের হাতে ছিল। প্রথমে আজিজুলকে গ্রেফতার করি। তারপর কৌশলে তাকে দিয়েই মোবাইলে কল করিয়ে ওই দু’জনকে নির্দিষ্ট জায়গায় এনে গ্রেফতার করা হয়।