দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

জবি প্রতিনিধি:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেলের বিরুদ্ধে এক ডাক্তারকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে নিয়ে কক্ষে আটকে নির্যাতন করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ওই ডাক্তারের নাম মোশারফ হোসাইন। তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের প্রফেসর ও আইসিইউ-এর প্রধান এবং পুরান ঢাকার মিটফোর্ডে অবস্থিত মেডি এইড হাসপাতালের পরিচালক। ভুক্তভোগী ডাক্তার মোশারফ নিজেকে ড্যাবের সদস্য এ বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বলে দাবি করেছেন।

ওই ডাক্তারকে অভিযুক্ত হিমেল ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মীসহ অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছেন এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ছাত্রদল নেতা হিমেল নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। জানা গেছে, গতকাল রবিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর মিডফোর্ডে মেডিলাইফ হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে এই ঘটনাটি ঘটে।

কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহরিয়ার হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক, মোজাম্মেল মামুন ডেনি, সদস্য মাইদ, সাদমান সাম্য, সহ ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মী মেডিলাইফ হাসপাতালে প্রবেশ করে এবং তারপর অপারেশন থিয়েটারে যায়। ওপারেশন থিয়েটার থেকে ভুক্তভোগী ডাক্তার মোশারফকে বের করে নিয়ে একটি কক্ষের দিকে যেতে দেখা যায় ছাত্রদল নেতা হিমেল ও তার সহযোগীদের। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হিমেলসহ তার নেতাকর্মীরা অপারেশন থিয়েটার রুমে অপারেশন চলাকালীন প্রবেশ করে ড. মোশাররফের কলার ধরে টানাটানি শুরু করে, হুমকি-ধামকি দেয় ও একপর্যায়ে মারধর শুরু করে। পরে অপারেশন থিয়েটার থেকে ডাক্তার মোশারফকে একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়।

ভুক্তভোগী ডাক্তার মোশারফের অভিযোগ, মেহেদী হাসান হিমেল তাকে একটি কক্ষে নিয়ে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। তার কাছ থেকে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও কেড়ে নেন হিমেল। একপর্যায়ে থাকে মারধরও করেন। তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে প্রায় দেড় ঘন্টা তার ওপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয় বলে দাবি করেছেন ওই ডাক্তার। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডাক্তার মো. মোশাররফ বলেন, মিডফোর্ডে আমার মেডিলাইফ হাসপাতালে আমি অপারেশন থিয়েটারে ছিলাম। তখন অপারেশন চলছিল।

আসরের আজান হলে আমি নামাজ পড়ছিলাম। সালাম ফিরিয়ে দেখি হিমেলসহ ১০ থেকে ১৫ জন আমার পেছনে দাঁড়ানো। আমাকে হিমেল জিজ্ঞেস করলো, ‘এই তোর নাম কি ডাক্তার মোশাররফ?’ আমি আমার পরিচয় তাদের বললাম যে, আমি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলের প্রফেসর এবং সেখানে আইসিইউ-এর প্রধান। আমি তাদেরকে সুন্দর করে কথা বলতে বললাম। আমি তাকে তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে সে বললো যে, সে জগন্নাথের ভিপি, তার নাম হিমেল। সে আমার কাছে আমার ফোন চাইলো এবং এক পর্যায়ে হিমেল আমার ফোন কেড়ে নেয়…।

তিনি জানান, বিল্ডিংয়ের তিন তলায় আমার একটা আইসিইউ ছিল। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ আমলে আমার সেই আইসিইউ দখল করে রেখেছিল। ৫ই আগস্টের পর তারা পালিয়ে যায়। কমিশনার কাজী আবুল বাশারসহ আমরা একটা মিটিং করি, সেখানে ওসি ছিল, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সম্পাদক সফু ভাই ছিল। আমরা বিচারে বসেছিলাম সমস্যা সমাধানের জন্য।

সবার সাথে কথা বলে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, ঝামেলা না করে ৩ তলায় তালা মারা থাকুক। বিচার করে, ফাইনাল করে আমরা তালা খুলে দেব। তিনি আরও বলেন, আমি যখন হিমেলকে বললাম যে, আমি এই বিষয়টি বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সফু ভাইকে জানিয়েছি। সফু ভাই বিচার করে একটা ব্যবস্থা নিবেন। তখন হিমেল বলে, ‘ওই সফু কে, সফু কে? আমি হিমেল, জবির ভিপি। আমি তখন তাকে সফু ভাইয়ের সাথে, ডিসির কথা বলতে বলি। কিন্তু তারা আমার ফোনটা আমাকে দেয় না। এক পর্যায়ে তারা আমাকে মারধর শুরু করে রুম আটকিয়ে।

হিমেল আমাকে হুমকি দেয় যে, আমি আমার ওয়ারীর যে বাসায় থাকি সেখান থেকে তুলে নিয়ে আসবে। আমার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে সে। আমার কাছে কোনো টাকা নেই জানালে, সে চেক লিখে দিতে বলে। ডা. মুর্শিদা, মাহবুব, ওদের সাথে যুগসাজশ করে চাঁদা দাবি করেছে। ডা. মুর্শিদা আরো বলেছে, ওর কাছে টাকা আছে। টাকা নাও। প্রায় দেড় ঘন্টা শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানোর পর হুট করেই তারা চলে যায়।

চলে যাওয়ার সময় আমার ফোন ফেরত দেয়। আমার হাসপাতালে অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিল। তারা সবাই দেখেছে। এঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে ডাক্তার মোশারফ বলেন, ওসি সাহেব প্রোগ্রামে ব্যস্ত থাকায় এখনও মামলা করিনি। আমি আমার নেতা সফু ভাইয়ের সাথে কথা বলেছি। তিনি মামলা করতে বলেছেন। তিনি রুহুল কবির রিজভি ভাইকেও জানিয়েছেন। আজ বিকেলে আমি কোতয়ালী থানায় জিডি করবো ও একটি মামলা করবো।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, আমি সেখানে গিয়েছিলাম, আমার মামার বিল্ডিং ডাক্তার হারিস তালা দিয়ে রাখছে। আমি তাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করেছি। সে যে মারধরের কথা বলছে, সেটা মিথ্যা।

আমি কেন মারব? বিল্ডিংটি যার, সে আমার মামা। পারিবারিক সম্পর্কের কারণে আমি বলতে গিয়েছি। তারা চারজন পার্টনারে হাসপাতাল দিয়েছিল, সেখানের কিছু জিনিস ভাগাভাগি নিয়ে সমস্যা, সেটা আমি সমাধান করতে গিয়েছি। তিনি আরও বলেন, আমি বলে আসছি তারা বুধবার বসবে, তারপর একটা সমাধান করবে। এখানে আমার আত্মীয় রক্তের না হলে যেতাম না। রুমে যে তালা ঝুলিয়ে রাখছে ডাক্তার হারিজ, আমি রুমের তালাও খুলি নাই।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version