নিজস্ব প্রতিবেদক: শিক্ষককে লাঞ্চিতের ঘটনার প্রতিবাদে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেওয়ায় নেত্রকোনায় হেফাজত নেতার বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও মারধর ঘটনার মামলায় শামীম মিয়া (৩০) নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। পরে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) গ্রেফতারকৃত শামীমকে জেলা আদালতে প্রেরণ করেছে বলে জানায় পুলিশ। এরআগে তাকে গত শনিবার রাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত শামীম নেত্রকোনা সদর উপজেলার মৌগাতি ইউনিয়নের ছোট গরদি গ্রামের আহাদ মিয়ার ছেলে। তিনি এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি।
ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী মাওলানা কারী মো. অনিছুর রহমান হেফাজত ইসলামী বাংলাদেশের মৌগাতি ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম-সম্পাদক ও বড় গরদি এলাকায় একটি মসজিদের ইমামতি করেন। তিনি ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত রাজধানী মতিঝিলে হেফাজত ইসলামী গ্রোগ্রামে পায়ে গুলিবিদ্ধ একজন হেফাজত কর্মী।
জানা যায়, গত ৮ এপ্রিল বেলা ১১টার দিকে মৌগাতি ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি রেনু মিয়ার নেতৃত্বে ছয়টি মোটরসাইকেল যোগে ছোট গরদি দাখিল মাদরাসায় আসেন ১০-১২ জন সন্ত্রাসী। পরে তারা মাদরাসার অফিসে অনধিকার প্রবেশ করে চাঁদা দাবী করে সন্ত্রাসী কায়দায় বেদড়ক মারধর ও লঞ্চিত করে মাদরাসার সুপার মো. আব্দুল খালেক খানকে টেনে হিছরে বের করে দিয়ে অফিস কক্ষ তালাবদ্ধ করে দেন।
এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী সুপার ওইদিন থানায়, উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা ও সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এ ঘটনার পরেরদিন ৯ এপ্রিল গরদি দাখিল মাদরাসা প্রাঙ্গনে শিক্ষার্থী-এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দেন ভুক্তভোগী হেফাজত নেতা আনিছুর রহমান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় ইউপি বিএনপি’র সভাপতি রেনু মিয়ার নেতৃত্বে তার ছেলেরাসহ অনুগত সহযোগীরা হেফাজত নেতার বাড়িতে বেআইনি জনতাবদ্ধে দেশী অস্ত্র নিয়ে অনধিক প্রবেশ করেন এবং বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও অর্থ চুরির অভিযোগ উঠে রেনু মিয়া ও তার সহযোগীদের ওপর।
পৃথক দুই ঘটনায় দুই মামলায় মৌগাতি ইউপি বিএনপির সভাপতি রেনু মিয়াকে প্রধান আসামি করে নেত্রকোনা মডেল থানায় মামলা দায়ের হয়।
বেআইনে জনতাবদ্ধে অনধিকার প্রবেশ করে সাধারণ জখম, মানহানী ও ভয়ভীতির হুমকি প্রদর্শনের দায়ে এক মামলার বাদী হন মাদরাসা সুপার ।
অপর আরেক মামলায় বেআইনি জনতায় অনধিকার প্রবেশ রেনুর মিয়ার হুকুমে মারপিট করে সাধারণ জখমসহ ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন, চুরি ও ভয়ভীতির প্রদর্শনের অপরাধে বাদী হন ভুক্তভোগী হেফাজত নেতা। এই মামলায় চোরই আনুমানিক মুল্য দেখানো হয়েছে সাত লক্ষ টাকা এবং এই মামলার এজাহারনামীয় আসামি শামীম মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
পৃথক দুটি মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামি শামীমকে আজ (রবিবার) দুপুরের দিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পরে আদালত তার মঞ্জুর করেন বলে জানায় ওসি।