দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

**হেড হান্টিং**—এই শব্দটি কর্পোরেট জগতে অত্যন্ত পরিচিত একটি প্রক্রিয়া। গুগল বা চ্যাটজিপিটিতে একটু খোঁজ করলেই এর সংজ্ঞা পাওয়া যাবে, তবে সহজ বাংলায় বলতে গেলে, এর অর্থ—অন্য প্রতিষ্ঠানের দক্ষ, মেধাবী ও অভিজ্ঞ জনবলকে নিজেদের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসা। একে বলা হয় *প্রো-অ্যাকটিভ রিক্রুটমেন্ট মেথড*, যেখানে চাকরিপ্রার্থী নিজে থেকে আবেদন করেন না, বরং প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেই তাকে খুঁজে নেওয়া হয়, আমন্ত্রণ জানানো হয়, এবং বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে তাকে ‘ভাগিয়ে’ আনা হয়।

বড় বড় কর্পোরেট পদগুলোতে নিয়োগ সাধারণত কফি খাওয়ার দাওয়াত থেকেই শুরু হয়। প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের কেউ দক্ষ ব্যক্তিকে ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানান, তার দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি, এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন—এবং পরে উপযুক্ত প্রস্তাব দেন। কারণ, আসল ট্যালেন্ট কখনওই নিজে থেকে আবেদন করে না, মিছিলেও নামে না, সমাবেশে তেলবাজিও করে না।

ঠিক তেমনই, একটি দেশের কার্যকর পরিচালনায়ও প্রয়োজন হেড হান্টিং। রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিতে, ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করতে, এবং জাতির অগ্রগতির রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে হলে প্রকৃত মেধাবীদের আহ্বান জানাতে হয়। তাদের নিয়ে আসতে হয় শ্রদ্ধা ও আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করে, প্রণোদনা দিয়ে নয়, দায়িত্ববোধ দিয়ে।

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস এই বিষয়ে একটি প্রশংসনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তার অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে যে নিয়োগ হয়েছে, তা দেখে বোঝা যায়—তিনি সুপরিকল্পিত হেড হান্ট করেছেন। প্রবাসী ও দেশীয় ট্যালেন্টদের কিছু কিছু নিযুক্তির পেছনে দেখা গেছে চুপিসারে কফির দাওয়াত, কিংবা ফোনে বলেছিলেন—“দেশের জন্য কাজ করার সুযোগ এসেছে, ফিরে এসো আশিক।”

এমন আহ্বান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, এমনকি বিদেশেও ছড়িয়ে থাকা বহু ‘আশিক’-এর জন্য এক আহ্বানস্বরূপ। এটাই একটি রাষ্ট্রনায়কের দূরদর্শিতা—সে জানে কোথায় কোথায় লুকিয়ে আছে জাতির সম্ভাবনাময় শক্তি।

কিন্তু, হেড হান্টিং করতে হলে নিজেকেও হতে হয় মেধাবান, প্রজ্ঞাবান। যদি আপনি নিজে দুর্বল হন, তাহলে আপনার পছন্দের লোকেরাও দুর্বল হয়ে যাবে। তখন হেড হান্ট ব্যাকফায়ার করে।

এ প্রসঙ্গে ২০১৬ সালের কথিত ‘হেড হান্ট’ করে রোবট সোফিয়াকে এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে কিছু প্রশ্ন করিয়ে এক ধরণের মিডিয়া সার্কাস সৃষ্টি করা হয়েছিল। সেই ঘটনার কিছুদিন পরেই তখনকার বেসিস চেয়ারম্যান মোস্তাফা জব্বার ‘উঠ ছোঁড়া তুই মন্ত্রী’ স্টাইলে মন্ত্রীসভায় ঢুকে পড়েন। রোবট দিয়ে PR করে একজন PR মন্ত্রী হয়ে গেলেন।

এমনকি প্রেসিডেন্ট পদেও *“উঠ ছোঁড়া তুই প্রেসিডেন্ট”* ধাঁচের হঠাৎ নিয়োগ দেখে বোঝা যায়—সেখানে ছিল না কোনো হেড হান্টিং, ছিল কেবল রাজনীতির যোগসূত্র।

**এখান থেকে শিক্ষা নেওয়ার আছে:**
যে রাজনৈতিক দল ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসতে চায়, তাদের প্রথমে বুঝতে হবে—ক্ষমতা পাওয়ার জন্য কর্মী বাহিনী দরকার, কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে দেশ গঠনের জন্য দরকার মেধাবী বাহিনী। এই মেধাবী বাহিনীকে খুঁজে পেতে হলে চাই এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, হেড হান্টিং-এর মত পদ্ধতি, এবং সেইসব নিঃস্বার্থ ‘আশিক’-দের জন্য আহ্বান জানাতে হবে—’চলে এসো, দেশের জন্য সময় এসেছে।’

**ফুটনোট:**
প্রকৃত মেধাবীদের কখনোই দলে নেওয়া যায় না বক্তৃতা বা শোডাউনের মাধ্যমে। তাদের কাছে যেতে হয় নীরবে, সম্মানের সাথে। যারা তা পারেন, তারাই রাষ্ট্রনায়ক; আর যারা পারেন না, তারা কেবল ক্ষমতাধর।

**লেখক: ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম**
চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গবেষণা কেন্দ্র

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওয়াল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version