নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার মদন উপজেলায় এক অসহায় নারীর ঘর ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রুহুল আমিন নামের এক বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে ওই নারী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। দুপক্ষকে তাদের কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলেছি। এখনো পর্যন্ত তারা কেউ আসেননি।
এরআগে গত ৫ এপ্রিল উপজেলার তিয়শ্রী তিয়শ্রী ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামে থাকা আম্বিয়া আক্তার নামে ওই নারীর ঘর ভেঙে দেন ওই বিএনপি নেতা। ঘর ভাঙার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর স্বামী গোলাপ মিয়া ওই নেতার বিরুদ্ধে মদন থানা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযুক্ত রুহুল, আমিন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি। তিনি শ্রীধরপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং ভুক্তভোগীর পরিবারও একই গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী আম্বিয়া আক্তার ও তার স্বামী রাস্তায় মাটি কেটে সংসার চালান। আয়ের সামান্য সঞ্চয় দিয় ২০০৭ সালে উপজেলার শ্রীধরপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ১১ শতাংশ জমি ক্রয় করে বসত বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছেন। গত ৫ এপ্রিল বিকালে হঠাৎ বিএনপির সভাপতি জায়গাটি তার নিজের দাবি করে লোকজন নিয়ে বসত বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় অসহায় পরিবারের বসত ঘর ভেঙে দেন এবং তাদের মারধর করেন।
ঘর ভাঙার একটি ভিডিও এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন নিজেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘরটি ভাঙতে থাকে। তার সাথে সহযোগিতা করেন তারই আপন ভাই শ্রীধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান। এসময় ভুক্তভোগী নারীকে ঠেলা ধাক্কা দিতেও দেখা যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নারী আম্বিয়া আক্তার জানান, আমি অসহায় গরীব মানুষ। অনেক কষ্ট করে জায়গাটা কিনে ঘর করেছিলাম। কিন্তু রুহুল আমিন জায়গাটা তার দখলে নেয়ার জন্য বসত ঘর ভেঙে দিয়েছে। তিনি এর বিচার চান।
ভুক্তভোগী নারীর ভাই বারেক মিয়া জানান, ‘আমার বোন রাস্তায় মাটি কেটে ও শ্রমিকের কাজ করে জায়গাটি কিনে ঘর করেছে। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিএনপির সভাপতি আমার বোনের ঘরটি ভেঙে দিয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে তিয়শ্রী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, ভিডিওতে যেটা দেখা গেছে সেটা ঘর নয়। ওইগুলো আসলে টিনের বেড়া ছিল। আমার রেকর্ডের জায়গায় ওই মহিলা বেড়া দিয়ে দখল করেছিল। তাই বেড়া সরিয়ে ফেলেছি। আমি যেহেতু ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তাই আমার বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অহনা জিন্নাত জানান, এ বিষয়ে এখনো অভিযোগ হাতে পাইনি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।