নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলায় ঝিমটি বাজারে চৌরাস্তা মোড়ে সরকারি রাস্তা দখল করে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে একাধিকবার সতর্ক করা হলেও নির্দেশ অমান্য করেন তিনি। অবশেষে অভিযান চালিয়ে রাস্তা দখলমুক্ত করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে মোহনগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) এম এ কাদের এ অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযুক্ত কামাল উদ্দিন উপজেলার তেতুলিয়া গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার ছেলে। তিনি ময়মনসিংহে ট্রাফিক পুলিশের এসআই (টিএসআই) পদে কর্মরত বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঝিমটি বাজারের চৌরাস্তা মেড়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি সরকারি রাস্তার পাশ দখল করে মার্কেট নির্মাণ শুরু করেন পুলিশের এসআই কামাল উদ্দিন। এলাকার লোকজনের অভিযোগ পেয়ে প্রশাসন একাধিকবার গিয়ে তাদের রাস্তা ছেড়ে দিয়ে মার্কেট নির্মাণ করতে বলেন। নির্মানাধীন মার্কেটের বারান্দা রাস্তার ওপর থেকে সরিয়ে নিতে বলা হয়।
এছাড়া রাস্তার জায়গায় তৈরি করা আরও কয়েকটি টিনটেড ঘর ভেঙে ফেলতে বলা হয়। গত ১২ মার্চ এসব স্থাপনা এক মাসের মধ্যে ভাঙার বিষয়ে মুছলেখা দেন কামাল উদ্দিন। এদিকে এক মাস হতে চললেও ভাঙার কোন লক্ষণ নেই। উল্টো স্থাপনা নির্মাণ করে যাচ্ছেন তিনি।
এমন খবর পেয়ে আজ (সোমবার) দুপুরে ঘটনাস্থাল পরিদর্শনে যান সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম এ কাদের। পরে তিনি অভিযান চালিয়ে লোকজন লাগিয়ে অবৈধ স্থাপনার অবৈধ অংশ ভেঙে রাস্তা উদ্ধার করেন।
এ বিষয়ে ঝিমটি বাজার কমিটির সভাপতি মো. দুলাল উদ্দিন বলেন, রাস্তাটি দখল করে মার্কেটটি নির্মাণ করছিলেন কামাল উদ্দিন। পেছনে তাদের জায়গা রয়েছে, ইচ্ছে করলে একটু পিছিয়েও করতে পারতেন। প্রশাসন এ বিষয়ে নিষেধ করলেও তিনি শুনেননি। তাই আজ অভিযান চালিয়ে রাস্তা উদ্ধার করেছে প্রশাসন। হাওর এলাকার এই রাস্তাটি চলাচলের জন্য খুবই দরকারি। রাস্তাটি উদ্ধার হওয়ায় যানবাহন চলাচলে উপকার হবে।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কুতুব উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের এমন উদ্যোগ প্রশংশনীয়। এতে রাস্তাটি চিরদিনের জন্য দখল হওয়া থেকে রক্ষা পেল। অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকুক।
তবে অভিযুক্ত ট্রাফিক পুলিশের এসআই কামাল উদ্দিন বলেন, আমরা রাস্তার জায়গা দখল করিনি। নিজেদের জায়গাতেই মার্কেট নির্মাণ করেছি। প্রশাসনের লোকজন যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছিল, সেভাবেই করেছি। রাস্তা পশ্চিম দিকে যাবে, কিন্তু তারা বারবার মেপে পূর্বদিকে অর্থাৎ আমাদের মার্কেটের দিকে নিয়ে আসছে। আমাদের সাথে অবিচার করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম এ কাদের বলেন, একাধিকবার সতর্ক করা হলেও তারা সেটা আমলে নিচ্ছিলেন না। এমনকি রাস্তার দখল ছেড়ে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মুছলেখাও দিয়েছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও স্থাপনা সরানোর কোন লক্ষণ নেই। তাই অভিযান চালিয়ে লোকজন দিয়ে রাস্তা দখলমুক্ত করা হয়েছে। অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে এমন অভিযান চলমান থাকবে।