নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে মো. নূরুল আমিন নূরু (৪০) নিখোঁজ হয়েছেন বলে তার পরিবার থেকে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে উপজেলার রোয়াইলবাড়ি আমতলা ইউনিয়নের আমতলা গ্রামে ভুক্তভোগীর পরিবার এ অভিযোগ করেন। নূরুল আমিনের পরিবার দাবি তাকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গুম করা হয়েছে।
নিখোঁজ নূরুল আমিনের স্ত্রী ডেইজি আক্তার (৩৫) জানান, দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের বাসিন্দা এডভোকেট রফিকুল ইসলাম, সবুজ মিয়া, লিলু এবং সাইদুলের সঙ্গে তার স্বামীর বিরোধ চলছিল। তারা তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিত। গত সোমবার (১৭ মার্চ) গভীর রাতে প্রতিবেশী মো. সিদ্দিক ভূঞার ছেলে রবিকুল ইসলাম নূরুকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে নূরুর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
ডেইজি আক্তার আরও বলেন, “আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই। আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে গুম করা হয়েছে। আমি সুষ্ঠু তদন্ত এবং দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
এদিকে, নূরুল আমিনের বড় ভাই সাইফুল ইসলাম, বাবা হাজী শামসুদ্দিন ও ছেলে ইয়াসিন তাদেরও একই অভিযোগ করেছেন। তাদের বিশ্বাস, নূরুর নিখোঁজের পেছনে রফিকুল ইসলামসহ অন্যরা জড়িত থাকতে পারে।
রবিকুল ইসলাম, যাকে নিয়ে নূরুকে ডেকে নেয়া হয়েছিল, সে ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহ আরও তীব্র হয়েছে।
রবিকুলের স্ত্রী শিল্পী আক্তার (৩৪) জানান, “ঘটনার রাতে নূরু (কাকা) আমাদের বাড়িতে আসেননি। আমার স্বামী রবিকুল, লিলু, আয়নাল, ইদ্রিস ও হাকিম সেদিন রাত আড়াইটা পর্যন্ত ফিসারিতে কাজ করছিলেন।” এর বেশি কিছু তিনি জানেন না।
পূর্ব শত্রুতার মামলার বাদী এবং নিখোঁজের অন্যতম অভিযুক্ত সবুজ মিয়া বলেন, “নূরু আমার ভাতিজা এবং আমাদের মধ্যে বিরোধ ও মামলা রয়েছে, তবে গুমের অভিযোগ মিথ্যা।”
নিখোঁজের ঘটনায় সবচেয়ে বেশি সন্দেহের তীরবিদ্ধ এডভোকেট রফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, গত ১৮ মার্চ নূরুল আমিনের স্ত্রী ডেইজি আক্তার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। এসআই মো. শফিউল আলমকে (নিরস্ত্র) তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
থানায় জিডির নং-৮৩৯, যেখানে ঘটনাটি নূরুকে অজান্তে হারিয়ে যাওয়া হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখনো নূরুল আমিনের কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।