শুভ তংচংগ্যা।
সরকারি তিতুমীর কলেজ নাট্যদলের উদ্যোগে আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে কলেজ ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পিঠা উৎসবকে ঘিরে ক্যাম্পাসে হাজার হাজর শিক্ষার্থীদের মনে আনন্দ অনুভূতি প্রকাশ পায়। পিঠা উৎসব বাঙালির জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে এই উৎসব ঘিরে মানুষের মনে জাগে এক অন্যরকম আনন্দ। বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা কেবল খাদ্য রসনার বিষয় নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির গভীরে প্রোথিত এক মধুর ঐতিহ্য। শীতকালে সকাল বেলায় কুয়াশার চাদরে ঢাকা সরকারি তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাসে প্রাকৃতিক পরিবেশে, মায়ের হাতে তৈরি ধোঁয়া ওঠা পিঠার স্বাদ যেন শীতের শুষ্কতাকে মধুর স্নেহে মুছে দেয়।
পাটিসাপটা, ভাপা, চিতই, নারকেলের পুলি, দুধপুলি—প্রতিটি পিঠার স্বাদ এবং ঘ্রাণ মানুষকে নিয়ে যায় শৈশবের স্মৃতিময় দিনে। পিঠা তৈরিতে ব্যবহার করা হয় চিরচেনা চালের গুঁড়া, খেজুরের গুড়, নারকেল, এবং দুধ। এই উপকরণগুলো কেবল স্বাদই নয়, বাঙালির ঐতিহ্য ও প্রকৃতির সঙ্গে গভীর সম্পর্কের কথাও স্মরণ করিয়ে দেয়।
পিঠা উৎসব কেবল খাবার খাওয়ার আনন্দ নয়, এটি ক্যাম্পাসে বন্ধু সম্পর্কের মধুর বন্ধনও। ক্যাম্পাসে ছেলে- মেয়েরা সব বন্ধু, বান্ধবী একত্রিত হয়ে আশেপাশে ঘোরাঘুরি করে এবং বয়োজ্যেষ্ঠরা পুরনো দিনের গল্প শোনায়।
শহরেও এখন পিঠা উৎসবের আয়োজন হয়, যেখানে নানা প্রকার পিঠার স্টল বসে এবং মানুষের ঢল নামে। এই উৎসব আমাদের মনে করিয়ে দেয় আমাদের সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও শেকড়কে। প্রযুক্তির আধুনিক যুগে যখন আমরা নিজেদের ব্যস্ততায় ভুলে যাই, তখন এই পিঠা উৎসব আমাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসে সেই স্নেহময় সময়ের কাছে। পিঠা উৎসবের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের ঐতিহ্য ধরে রাখি এবং নতুন প্রজন্মকে সেই ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করার সুযোগ পাই।
এটি কেবল একটি উৎসব নয়, এটি বাঙালির হৃদয়ের এক উজ্জ্বল অনুভূতি, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে যাবে। ( আশিকা নিগার, বাংলা ডিপার্টমেন্টে ১৯-২০) ক্যাম্পাসে পিঠা আয়োজন সত্যিই এক অনন্য অনুভূতির সৃষ্টি করে। শীতের মিষ্টি সকালে ধোঁয়া ওঠা পিঠার ঘ্রাণ যেন আমাদের গ্রামীণ ঐতিহ্যের শিকড়ে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ভাঁপা পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটার মতো পিঠাগুলো শুধু খাবার নয়; এগুলো আমাদের সংস্কৃতি, ভালোবাসা এবং ঐক্যের প্রতীক। বন্ধুদের সাথে হাসি-আনন্দে মেতে ওঠা, পিঠার স্বাদ নিয়ে মজার গল্প করা এবং সেই মুহূর্তগুলো ক্যাম্পাসের উষ্ণ পরিবেশকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে। এ আয়োজনের মাধ্যমে আমাদের জীবনের ব্যস্ততার মাঝে কিছু সময়ের জন্য হলেও আমরা প্রকৃত আনন্দ অনুভব করি, যা আমাদের মনে দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতি হিসেবে রয়ে যায়। ক্যাম্পাসে পিঠা উৎসব সত্যিই শীতের দিনে এক স্বপ্নময় উষ্ণতার স্পর্শ। ( জেভিয়া চাকমা, বোটানি ডিপার্টমেন্ট ২৩-২৪ )