মনিরুজ্জামান খান গাইবান্ধা।।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়ন পরিষদের সামনে। গায়ে চামড়ার ভাঁজ। শরীর চলে না। শীতে জুবুথুবু অবস্থা। গায়ে কম্বল মুড়িয়ে বসে আছেন গাছের নীচে। বিক্রি করেন ভাজা বাদাম। কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে প্রতিদিন সকালে আসেন। বৃদ্ধা মালেকা বেওয়া (৮৫)। বিক্রি শেষে সন্ধ্যায় ফেরন আপন ঠিকানায়।
কথা বলে জানা যায়, বৃদ্ধা মালেকা বেওয়ার বাড়ি সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নে। নিজের জায়গা জমি নেই থাকেন সরকারের দেয়া গুচ্ছ গ্রামে। সেতো জীবনের এক নির্মম পরিহাস, স্বামী-সন্তান নিয়ে ছিল সুখের সংসার। এক সময়ে দারিদ্রতার কষাঘাতে সংসারে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার।
সংসারের শেষ সম্বল বাস্তুভিটাটুকু বিক্রি করে হয়ে যান নিঃস্ব অসহায়। দুই পুত্র রেখে স্বামীও পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। পরে দুই পুত্রকে নিয়ে আশ্রয় নেন এই গুচ্ছ গ্রামে। দুই পুত্রের মধ্যে এক পুত্রও মারা যায়। আরেক পুত্র হাবাগোবা। কেউ নেই, এই বৃদ্ধা বয়সে সংসারের হাল ধরবে। তাই বাদাম বিক্রি করে সংসার চলে মা-ছেলের। বল্লমঝার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুলফিকার রহমান জানান, মালেকা বেওয়া দীর্ঘদিন থেকে এই গাছের নীচে বসে বাদাম বিক্রি করেন। ৫/১০ টাকার বাদাম কিনলেই মহাখুশি। কারো দয়ায় নয়, পরিশ্রমের উপার্জনেই বাঁচতে চান জীবন যুদ্ধে হার না মানা এই বৃদ্ধ নারী মালেকা বেওয়া ।