মিয়া মোহাম্মদ ছিদ্দিক, কটিয়াদী(কিশোরগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ
কোন একসময় কয়েক গ্রাম ঘুরেও একটি টিন কাঠের উপকরণ দিয়ে তৈরি দুতলা বাড়ির দেখা যেতো না৷ যে গ্রামে এমন বাড়ি থাকতো তিনিই ছিলেন প্রতাপশালী। বর্তমান সময়ে একসময়ের জৌলুশ ছাড়ানো বাড়িগুলো বর্তমানে দেখা যায় জরাজীর্ণ৷ যা কিছু আছে, তাও ধ্বংসের পথে৷
কিশোরগঞ্জে জেলায় ষাটের দশকে এসব বাড়িগুলোর আধিপত্য ও জৌলুশ ছিলো৷ এখন আধুনিকতার ছোঁয়াতে এবং ইট পাথরের আধিক্যতায় এসব বাড়ি বিলুপ্তির পথে৷ এখনো জেলার বিভিন্ন উপজেলায় দেখে মিলে বিশাল টিন ও কাঠের তৈরি দুতালা বাড়ি। গজারি, সেগুন কাঠ আর মজবুত টিন দিয়ে তৈরি এসব বাড়ি এখনো ঐতিহ্যের সাক্ষ্য বহন করছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কটিয়াদী উপজেলা পৌর এলাকায় বিভিন্ন মহল্লায় অন্তত ১০টি টিন ও কাঠের দুতলা বাড়ি দেখা যায়৷ মুমুরদিয়া ইউনিয়নে বেশকিছু দুতলা বাড়ি রয়েছে৷ আচমিতা, মসূয়া, গচিহাটা এলাকায় এখনো কালের সাক্ষী হয়ে আছে এসব বাড়ি৷ ঘরের ভিতর দিয়ে কাঠের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা যেতো৷ মানুষ থাকতে পারতো৷
এছাড়াও জিনিসপত্র রাখা যেতো৷ বর্তমানে বাড়িগুলোর অবস্থা খুবই নাজুক৷ এর মধ্যে কিছু বাড়িতে এখনো মানুষ বসবাস করছে৷ এছাড়াও অনেক শৌখিন মানুষ মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুর থেকে নকশা করা কারুকার্য কাঠের তৈরি ঘর নিয়ে এসে এলাকায় স্থাপন করেন৷
মুমুরদিয়া বর্তিহাটা এলাকার আব্বাস আলী মাতাব্বর (৯৫) বলেন, ‘একসময় এমন দুতলা বাড়ি দেখতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ছুটে আসতো। বাড়ি তৈরি শেষ হলে জেফত (দাওয়াত) দিয়ে মানুষকে খাওয়ানোর একটা রীতি ছিলো। বাড়িগুলো ছিলো পরিবেশবান্ধব৷’
কটিয়াদী পৌর এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, হীরালাল সাহার মোড়, পূর্বপাড়া মহল্লায় কয়েকটি পুরাতন কাঠ-টিনের তৈরি দুতলা বাড়ি রয়েছে৷ বাড়িগুলো এখনো ঐতিহ্য বহন করে চলছে। হঠাৎ চোখে পড়লে মুহূর্তে কয়েক যুগ আগে ফিরে যায় মন। গ্রামে হাতেগোনা দুয়েকটা এমন ঘর দেখতে পেতাম৷
ইতিহাস সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরা বলেছেন, আর এক যুগের পরে হয়তো এসব পুরাতন টিন ও কাঠের তৈরি দুতালা বাড়ি গুলো বিলুপ্তি হয়ে যাবে৷ হয়তো যাদুঘরে এর স্মৃতি খুঁজবে নতুন প্রজন্ম।