লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সমন্বিতভাবে পেজার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক হাজারেরও বেশি মানুষকে আহত করা হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই হামলায় লেবাননে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মুজতাবা আমানিও আহত হয়েছেন।
হিজবুল্লাহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা লেবাননের রাজনৈতিক ও সামরিক প্রতিষ্ঠানের একটি শক্তিশালী অংশ। ইরানের সমর্থনপুষ্ট এই সংগঠন গাজায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত হামাসকে সমর্থন করে আসছে।
হিজবুল্লাহ এই আক্রমণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছে এবং এটিকে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সবচেয়ে বড় ফাঁকফোকর হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। সংগঠনটি দাবি করেছে, ইসরায়েল তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনুপ্রবেশ করে এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। বিস্ফোরণের সময় সব পেজার একইসঙ্গে বিস্ফোরিত হয়, যা হিজবুল্লাহর নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি বলে তারা মনে করছে।
এদিকে, হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত লেবাননের বিভিন্ন অঞ্চলে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, গাজায় চলমান যুদ্ধের শুরু থেকে ইসরায়েলের সঙ্গে প্রতিদিনই গুলিবিনিময় চলছে। এই বিস্ফোরণকে তারা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আঘাত হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, “বৈরুতের দক্ষিণের এলাকা এবং দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহর বহু সদস্য আহত হয়েছে যখন তাদের পেজারগুলো একযোগে বিস্ফোরিত হয়।”
হিজবুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরেই নিজেদের টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে যোগাযোগ রক্ষা করে এবং সদস্যদেরকে মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বলেছে। গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলি প্রযুক্তিগত অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, পেজার হলো একটি ছোট তারবিহীন যন্ত্র, যা মূলত বার্তা গ্রহণ এবং কখনও কখনও বার্তা প্রেরণের জন্য ব্যবহৃত হয়। মোবাইল ফোনের প্রচলনের আগে পেজার ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো। সাধারণত পেজার একটি টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বার্তা বা সতর্কতা গ্রহণ করে এবং জরুরি সেবা বা হাসপাতালের মতো জায়গায় তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জন্য এই যন্ত্রটি ব্যবহৃত হয়।