সোয়াইব আলী, জবি প্রতিনিধি :

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে আন্দোলনে সরাসরি যুক্ত থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, মারধর করা হুমকি-ধামকি দেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ কর্মী আবির উজ-জামান আবিরকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বুধবার (২৮ আগষ্ট) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের জরুরি একাডেমিক সভায় তাকে বিভাগ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর আগে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ ছিল আবিরের বিরুদ্ধে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আশরাফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ড. আশরাফুল আলম বলেন, তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অভিযোগ ছিল। শিক্ষার্থীরা সেই অভিযোগ দিয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সাময়িক বহিষ্কারও করা হয়েছে।

সেই প্রেক্ষিতে আমরা বিভাগে জরুরি একাডেমিক সভা ডেকে তাকে বিভাগের যাবতীয় কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সে ক্লাস-পরীক্ষাসহ বিভাগের যাবতীয় কার্যক্রমে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে পারবেনা।

এর আগে বুধবার বিভাগের সকল ব্যাচের ক্লাস শুরু হলে ক্লাসে আসেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আবির উজ-জামান৷ তাকে ক্লাসে দেখে বিভাগের সকল শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে তাকে বহিষ্কারের দাবিতে বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন এবং বিভাগের চেয়ারম্যান আশরাফুল আলমকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

এরপর জরুরি একাডেমিক সভায় বসেন বিভাগের শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আবিরকে বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরে চেয়ারম্যান ও অন্যান্য শিক্ষকদের সহায়তা ক্যাম্পাস থেকে আবিরকে বের করে দেয়া হয়।

সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইভান তাহসিব বলেন, ছাত্রদের আন্দোলন চলাকালে ছাত্রদের ওপর যে হামলা করা হয়েছে সেখানে ছাত্রলীগের কর্মী হয়ে প্রকাশ্যে হামলায় অংশ নিয়েছে। আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়েছে, হুমকি-ধামকি দিয়েছে। এই আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকারের যে গণহত্যা চলেছে, সেখানে সে শেষ পর্যন্ত সমর্থন দিয়ে গেছে।

এর বাইরে বিভাগে শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং এর সাথে সে যুক্ত ছিল। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি দেখিয়েছে, নির্যাতন করেছে। সেজন্য আমরা মনে করি প্রশাসনের একটা শক্ত অবস্থান তার বিরুদ্ধে থাকা উচিত। তাকে স্থায়ী বহিস্কারের দাবি জানাই।

এদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী আবিরের বিরুদ্ধে এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। গত ৮ মার্চ গাজীপুরের সাফারি পার্কে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগে ১ এপ্রিল অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের ৬৪তম সভায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version