কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি 

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে মামা পরিচয়ে শিশু সাইফা (৬) অপহরণের ঘটনার ১২ ঘন্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে৷ ২৭ আগষ্ট দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে কিশোরগঞ্জ শহরের জাহাঙ্গীর মোড় সংলগ্ন একটি আবাসিক হোটেল থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি দল৷ তবে এসময় অভিযানের আগেই সটকে পড়া অপহরণকারী ব্যাক্তিকে আটক করা যায়নি৷

এ ঘটনায় শিশুর পিতা বাদী হয়ে জালালপুর ইউনিয়নের মন্তির ওরুফে আঃ ছাত্বারের ছেলে মোবারক হোসেন (২৪) ও কুলিয়ারচর উপজেলার আগরপুর গ্রামের আলম মিয়ার ছেলে আশিক মিয়া (১৯) এই দুই জনের নাম উল্লেখ করে এবং বাকি ১-২ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেছে।

এর আগে মঙ্গলবার ২৭ আগষ্ট দুপুরে উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের চর-ঝাকালিয়া হলি ক্রিসেন্ট কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সামনে থেকে এই অপহরণের ঘটনা ঘটছে৷

শিশু সাইফা একি ইউনিয়নের বাসিন্দা শফিক মিয়ার মেয়ে৷ শিশুটি ওই স্কুলের শিশু শ্রেণীর শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার দুপুরে স্কুল ছুটির পরে প্রাইভেট পড়া শেষ করার পরপরই স্কুলের সামনে থেকে মামা পরিচয়ে সহপাঠীদের সামনে থেকে নিয়ে আসা হয়েছিলো।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, নিখোঁজের পর থেকে বিভিন্ন স্থানে খুঁজাখুঁজি শুরু করে পরিবার৷ থানায় জিডিও করা হয়৷ সন্ধার দিকে স্কুল থেকে কয়েকশো গজ দুরত্বে আশপাশের বাজারের সিসিটিভি ফুটেজ চেক করে এক ব্যাক্তিকে দেখা যায় শিশুটিকে নিয়ে যেতে৷ লোকটির পিছনে পিছনে হাটছে মেয়েটি।

পরিবারের লোকজন ভিডিও ফুটেজ দেখে মেয়েকে এবং সাথে থাকা এক ব্যাক্তিকে চিনতে পারেন। তার নাম মোবারক হোসেন। সে মেয়েটির গ্রামেরই বাসিন্দা। কিছুদিন আগে সে ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের আইন বিভাগে পড়াশোনার জন্য ভর্তি হয়েছিলো বলেও জানা যায়৷

পরে পুলিশ তদন্তে নামে। সেনবাহিনী ও পুলিশ প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের আফতাব আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করে মেয়েটি৷

হোটেলের রেজিস্ট্রার ভাউচারে দেখা যায়, নামের স্থানে মোবারক হোসেন, ঠিকানা কটিয়াদী উল্লেখ করে একটি ভূয়া এনআইডি নম্বর দিয়ে ১১৫ নম্বর রুম ভাড়া নেয়।

হোটেলের কাউন্টারে থাকা লোকজন বলেন, লোকটি তার সাথে থাকা শিশুকে তার নাতনি পরিচয় দিয়ে বলে, তার মা বাবা এক্সিডেন্ট করে আহত হয়ে শহরের সৈয়দ নজরুল ইসলাম হাসপাতালে ভর্তি আছে। রাত আনুমানিক সাড়ে এগারোটার দিকে শিশুর মা বাবাকে হাসপাতালে খাবার দিয়ে আসবে বলে কাউন্টারে বসিয়ে রেখে চলে যায়।

মেয়েটিকে উদ্ধারে সহায়তা করেন সেনবাহিনীর সার্জেন্ট মো. কামালের নেতৃত্বে একটি টিম ও কটিয়াদী মডেল থানার এসআই কামালের সাথে পুলিশের টিম৷

শিশুর পিতা কামাল মিয়া বলেন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের চেষ্টায় আমার মেয়েকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও গণমাধ্যম কর্মী, শিক্ষার্থীসহ সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি৷ এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করেছি৷

কটিয়াদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি গোলাম সারোয়ার বলেন, মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার পরিবারের নিকট দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুর পরিবার মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে৷

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version