নিজস্ব প্রতিবেদক: নেত্রকোনার পূর্বধলায় হিন্দুদের মন্দিরে নাশকতা সৃস্টি করতে গিয়ে নেপাল চন্দ্র ঘোষ (৩২) নামে সনাতন ধর্মের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম জনতা ও পাহারায়রত আনসার সদস্যরা। উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের বাড়হা কালীবাড়ী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে শনিবার দিনগত রাত ২টার দিকে এমন ঘটনা ঘটে। 
আটককৃত নেপাল চন্দ্র ঘোষ মন্দিরের পশেই বাড়হা ঘোষপাড়া গ্রামের সুধীর চন্দ্র ঘোষের পুত্র। পরে আজ (রবিবার) সকালে তাকে পুলিশের হাতে তোলে দেওয়া হয়। জনতার ধাওয়ার সময় নেপালের বাকী সংঙ্গীরা পালিয়ে যায়।
মন্দিরের পাশে বসবাসকারী স্থানীয় বাসিন্দা কেবল চন্দ্র বর্মন জানান, শনিবার দিনগত রাত ২টার দিকে তিনি প্রকৃতির ডাকে ঘর থেকে বাইরে বের হন। এসময় মন্দিরে আঘাতের শব্দ শুনতে পান। পরে পার্শ্ববর্তী আরো কয়েকজনকে ডেকে নিয়ে মন্দিরে দিকে আসলে আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে সংঘবদ্ধ চক্রের কয়েকজন দুটি মোটর সাইকেলে করে পালিয়ে যায়। এ সময় আমাদের ধাওয়ায় মন্দিরের সীমানা প্রাচীর টপকিয়ে ভেতর থেকে বের হওয়ার সময় প্রাচীর থেকে পড়ে গেলে নেপাল চন্দ্র ঘোষ নামে এক নাশকতাসৃষ্টিকারীকে আটক করা হয়।
আটককৃত নেপাল চন্দ্র ঘোষ জানায়, মন্দিরে দান বাক্স ভেঙ্গে অর্থ লুট ও পরে আগুন দেওয়ার জন্য তার বাড়ীর পাশে আর একজন সনাতন ধর্মের কৃষ্ণ ঘোষের পুত্র জয় চন্দ্র ঘোষ এবং পাশ্ববর্তী দুর্গাপুর উপজেলার থেকে আরও ছয়জনকে নিয়ে পরিকল্পনা করে। এজন্য তাদেরকে ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হবে বলে জয় চন্দ্র ঘোষ তাকে জানায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী সবাই মিলে তারা হাতুরী-ছেনা দিয়ে দান বাক্স ভাঙ্গার জন্য আঘাত করতে থাকে এবং শেষে আগুন দেওয়ার জন্য কিছু খড় ও গ্যাস ম্যাচ প্রস্তুত রাখে। হাতুরীর আঘাতের শব্দে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে ছুটে আসলে তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়।
খবর পেয়ে রাতেই উপজেলা বিএনপি ও জামাায়তের লোকজন ঘটনা স্থলে ছুটে আসে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটককারী নেপাল চন্দ্র ঘোষকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. সাইদুর রহমান তালুকদার বলেন, খবর পেয়ে ভোরেই ঘটনা স্থলে ছুটে যাই এবং হিন্দু নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলি। তিনি আরও বলেন একটি চক্র দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি বহি:বিশ্বে দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করতে এমন কাজ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
স্থানীয় পুজারী সুনীল চন্দ্র বর্মন বলেন, আমার এখানে ধীর্ঘদিন যাবত হিন্দু মুসলিম মিলে সম্প্রীতি বন্ধন বজায় রেখে বিভিন্ন পুজা উৎসব করে আসছি। গতকালের ঘটনাটি একটি অনাকাংখিত ঘটনা। এর মাধ্যমে একটি চক্র আমাদের সম্প্রীতির বন্ধনকে বিনষ্ট করতে যায়। 
মন্দির কমিটির সভাপতি শ্যামল চন্দ্র বর্মন জানান, আমি পূর্বধলা বাজারে অবস্থান করি। ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ছুটে আসি এবং পুলিশকে খবর দেই। তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন স্থানীয় লোকজন টের না পেলে এখানে হয়তা তারা বড় ধরনের নাশকতা করত। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
পূর্বধলা থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনা স্থলে পাঠানো হয়। তারা আটককৃত একজনকে থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করার জন্য পুলিশী তদন্ত চলমান রয়েছে।
Share.
Leave A Reply

Exit mobile version