ঝিনাইদহের শৈলকুপার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের কাশিনাথপুর গ্রামের সামাজিক মাতব্বর সাইফুল ইসলামের ছেলে রানা (১৬) কে বুধবার দুপুরে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। নিহত রানার পিতা সাইফুল ইসলাম মোস্তাক শিকদারের সামাজিক মাতব্বর ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নুর কর্মী। হামলাকারীরা ওই ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বিশ্বাসের কর্মী সমর্থক বলে জানা গেছে।

তথ্য সুত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে বন্দেখালী এলাকা থেকে ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান বিশ্বাস হামলার স্বীকার হোন। বাড়ী ফেরার সময় তাকে গাড়ী থেকে নামিয়ে কুপিয়ে ও হাতুরি পেটা করে ফেলে রাখা হয়।

হামলায় আহত হয়ে বর্তমানে তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চেয়ারম্যানের উপর হামলার পর থেকে এলাকায় বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট শুরু হয়। চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বিশ্বাসের উপর হামলার জেরে বুধবার
বন্দেখালী গ্রামের সামাজিক মাতব্বর সাইফুল ইসলাম এর ছেলে রানাকে হত্যা করা হয়।

নিহত রানার চাচা জানায়,রানা এবার এসএসসি পাস করেছে, রানা কোনো সমাজ সামাজিকতা বোঝে না ও একটা নিরহ ছেলে,রানা পাশ্ববর্তী উপজেলার সাবিনগর গ্রামে নানা বাড়ী ছিল,বুধবার দুপুরে নানাবাড়ি থেকে বাড়ীতে আসছিল পথে মধ্যে মতিয়ার চেয়ারম্যানের লোকজন ডাউটিয়া বাজার থেকে মারার জন্য তাকে ধাওয়া করলে প্রাণের ভয়ে রানা দৌড়ে পালিয়ে আসে,হামলাকারীরা তার পিছু নিয়ে কাশিনাথপুর আক্তারের বাড়ি পযন্ত চলে আসে।

রানা প্রাণ বাচাঁতে আক্তারের ঘরের মধ্যে আশ্রয় নেয়।ঘরে ঢুকে ভিতর থেকে লোহার দরজা আটকে পালিয়ে থাকে। এদিকে হামলাকারীরা দরজা ভাঙার চেষ্টা চালায়,ততক্ষণে রানা পরিবারের সবাইকে তাকে বাঁচানোর জন্য ফোন করে,পরিবারের লোক পুলিশকে বললেও পুলিশ রানাকে বাঁচাতে আসেনা বলে অভিযোগ করেন।

প্রায় ১ ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে দরজা ভেঙে রানাকে ঘর থেকে বের করে হামলাকারীরা তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে। আহত রানাকে উদ্ধার করে প্রথমে শৈলকুপা হাসপাতালে নিয়ে আসে।সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক রানাকে ফরিদপুর মেডিকেলে রেফার করে। হাসপাতালে যাওয়ার পথে রানার মৃত্যু হয়।

এঘটনার পর থেকে এলাকায় দফায় দফায় বেশ কয়েকটি বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও গরু-ছাগলসহ নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। ভাংচুরের সময় শিশু ও মহিলাসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলেও জানা গেছে।

ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি নায়েব আলী জোয়ার্দার ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা আরিফ রেজা মন্নু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তার মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকায় শোকের মাতম চলছে।

ঝিনাইদহের সহকারী পুলিশ সুপার (শৈলকুপা সার্কেল) অমিত কুমার বর্মন জানান, হত্যাকান্ডের পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ও বাড়ীঘর ভাংচুর এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version