সোমবার, জুলাই ১, ২০২৪

প্রশ্নফাঁসসহ নানা অপকর্মে জড়িত জবি ছাত্রলীগ নেতা আকতার

যা যা মিস করেছেন

সোয়াইব আলী, জবি প্রতিনিধি:

২০২২ সালের ১ জানুয়ারি মো. ইব্রাহীম ফরাজিকে সভাপতি ও এসএম আকতার হোসাইনকে সাধারণ সম্পাদক করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর থেকেই জবি ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটির নেতারা জন্ম দিচ্ছে নানা বিতর্কের। আড়াই বছর ধরে চাঁদাবাজি ও নারী কেলেঙ্কারীসহ নানা অভিযোগের পর এবার বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে মেয়াদোত্তীর্ণ এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক এসএম আক্তার হোসাইনের বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আকতার হোসাইন তা র নিজ ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের এমসিকিউ এর উত্তর অন্যজনকে প্রদান করেন। উত্তরপত্রের অধিকাংশই ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সাথে মিলে যায়।

মেসেঞ্জার বার্তায় দেখা যায়, যিনি উত্তর নিচ্ছেন তিনি আকতারের কাছে সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার অনুরোধ জানান। জবাবে আকতার সব দিয়েছেন বলে ফিরতি বার্তায় জানান। সেই সাথে এটি কাউকে না জানানোর অনুরোধ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতারা সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে আকতারের নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের  কথা তুলে ধরেন।

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রাসেল বলেন, ভর্তি বাণিজ্য, জালিয়াতি, টেন্ডার বাণিজ্য এসব তো ছাত্রলীগের উদ্দেশ্য না। যারা এসব করবে তারা অন্য কোনো সংগঠনের সাথে যুক্ত হোক। তারা ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে এসব অপরাধ করে সংগঠনের সুনাম নষ্ট করছে।

জবি শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সহ-সভাপতি মিঠুন বাড়ৈ বলেন, সাধারণ সম্পাদক আকতার দীর্ঘদিন যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র জালিয়াতি এবং বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ আমাদের কাছে আছে।

মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সহ-সভাপতি হাবুল হোসেন পরাগ বলেন, একের পর এক বিতর্কিত কাজ করে সংগঠন কে কলুষিত করেই যাচ্ছে বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। জবি ছাত্রলীগ ইব্রাহিম ও আকতারের কাছে ইজারা দেওয়া হয় নাই। ব্যক্তির দায় সংগঠন নেবে না। সংগঠনের মান ক্ষুণ্ণ করে যখন কেউ প্রশ্নফাঁসের মত গুরুতর অপরাধের সাথে জড়িত হয় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।

এদিকে ফেসবুক মেসেঞ্জারের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে বের হয়ে আসে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস নিয়ে একটি অডিও ক্লিপও। আকতারের মামাতো ভাই পরিচয়ে মাদারীপুরের কাকন মিয়া ভর্তি পরীক্ষায় টিকিয়ে দেওয়ার গ্যারান্টি দেয় এক ব্যক্তিকে।

ওই অডিও ক্লিপে শোনা যায়, কাকন মিয়া নিজেকে আকতারের আপন মামাতো ভাই পরিচয়ে অপর পাশের ব্যক্তিকে পরীক্ষায় টিকিয়ে দেওয়ার গ্যারান্টি দিচ্ছেন এবং কল রেকর্ড যাতে লিক না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করেন।

এবিষয়ে কথা বলতে কাকন মিয়াকে প্রশ্ন করা হলে যিনি মোবাইল ফোন নম্বর দিয়েছেন তার সাথে কথা বলতে বলা হয়। এরপর আর কোনো কথা না বলেই ফোন কেটে দেন তিনি।

তবে এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত না থাকার দাবি করেন আকতার হোসাইন। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, তাহলে আমার আপন ছোট ভাইতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার কথা ছিল। সে প্রাইভেটে পড়ছে কেন? আপনি যে প্রশ্নটা করেছেন তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে যে কথাগুলো বলছেন এর কোনো প্রমাণ আছে আপনাদের কাছে?

অপরাধে জড়িত থাকলে আকতারের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।  তিনি বলেন, ‘অভিযোগ টা এসেছে। যাচাই-বাছাই চলতেছে। অনুসন্ধান করে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এবিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা, গঠনতন্ত্র বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা, শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা এবং আদর্শ বিরোধী কর্মকাণ্ড কেউ পরিচালনা করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

সর্বশেষ

Exit mobile version
x
This Site Is Protected By
Shield Security