আরিফ শেখ, রংপুর প্রতিনিধিঃ

নিজেই রোগী হয়ে পড়ে আছে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটি। রোগীদের জরুরী স্বাস্থ্য সেবা দিতে কেনা এই অ্যাম্বুলেন্সটি ৩ বছর ধরে নষ্ট হয়ে পরে থাকায় সদর ইউনিয়ন ও আশেপাশের হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

দুর্ঘটনা, হৃদরোগ ও মাতৃত্বজনিত কারণে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন। সেই সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে কুর্শা সদর ইউনিয়নে এলজিএসপি প্রকল্পের অর্থ দিয়ে অ্যাম্বুলেন্স সংযোজন করা হয়েছিল ২০১৩ সালে । কিন্তু সেই অ্যাম্বুলেন্সটি চলাচলের অকেজ হয়ে গেছে । গত ৩ বছর ধরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত কিংবা পুনরায় চালু করার কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় একদিকে যেমন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্দ্যেশ্য ভেস্তে যাচ্ছে অপরদিকে নষ্ট হচ্ছে সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা। ভোগান্তি সহ্য করেই রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাধ্য হয়ে দিগুন-তিনগুণ টাকায় মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কারসহ বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে বিভিন্ন ক্লিনিক-হাসপাতালে ছুটছেন স্বজনরা। এমতাবস্থায় দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সটি মেরামত করে চালু করাসহ আরও নতুন অ্যাম্বুলেন্সের দাবি করেন এলাকাবাসী।

কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের অ্যাম্বুলেন্স চালক মোঃ আকতারুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালে অ্যাম্বুলেন্সটি নষ্ট হয়ে যায় । এরপর ব্যক্তিগতভাবে খরচ করে অনেক কষ্টে টেনেটুনে ১ বছর চালিয়েছি। ২০২১ সাল আসতে আসতে আর কুলিয়ে উঠতে পারিনি । পরে হাল ছেড়ে দিতে বাধ্য হই । এখনো মানুষ অসুস্থ হলে আমাকে ফোন দেয় অ্যাম্বুলেন্সের জন্য । কিন্তু আমার সেই সেবা করার সুযোগ নেই । অনেককেই বিভিন্ন ড্রাইভারদের নাম্বার দেই । তারা অ্যাম্বুলেন্স না পেলে ভ্যান, রিক্সা, অটো, মাইক্রো বা কার ভাড়া করে বিপদ সাড়ে । অ্যাম্বুলেন্সটি ভাল থাকলে হয়তো আমি নিজেই তাদের এই সেবাটুকু করতে পারতাম ।

কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মামুন জানান, আগের অ্যাম্বুলেন্সটি এলজিএসপি প্রকল্পের বরাদ্দ দিয়ে কেনা হয়েছিল । সেটি নষ্ট হয়ে গেছে । বর্তমানে আমাদের পরিষদে এলজিএসপি প্রকল্প বন্ধ আছে । তাই নষ্ট অ্যাম্বুলেন্সটি সচল করতেও পারছিনা । আগামী অর্থ বছরে যদি এই প্রকল্প চালু হয় তাহলে আমরা উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নতুন অ্যাম্বুলেন্স কিনব ।

ইউএনও রুবেল রানা জানান, নষ্ট অ্যাম্বুলেন্সটির ব্যাপারে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে । মেরামত সম্ভব হলে দ্রুত ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে । অন্যথায় জরুরি সেবা নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে বিকল্প চিন্তা করব ।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version