রুহুল আমিন,ডিমলা(নীলফামারী)
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১২-জুন) সারাদিনব্যাপী উপজেলা পরিষদ হলরুমে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা (ইউএনও) এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক সরকার মিন্টু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ধূমপান মানে বিষপান। যা মানুষকে কুড়িয়ে কুড়িয়ে খায়। তামাকজাত দ্রব্যের ইতিবাচক কোনো দিক নেই বরং ক্ষতির অনেক দিক রয়েছে। গুল-জর্দ্দা, সিগারেট ইয়াবা ট্যাবলেট চেয়েও ক্ষতিকর বেশি।
সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা বলেন, ধূমপায়ী ব্যক্তি নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আবার এ দ্বারা আশপাশে থাকা মানুষদেরও ক্ষতি করে। কালের বিবর্তনে তামাকের ব্যবহারেও ভিন্নতা এসেছে। তামাক, জর্দ্দা, হুক্কা, বিড়ি, সিগারেট পেরিয়ে তরল নিকোটিন বহনকারী ক্ষতিকর ই-সিগারেটের ব্যবহারও এখন দৃশ্যমান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সেকেন্দার আলী বলেন, সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে বিড়ি, সিগারেট, জর্দার মতো তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে দেশের মানুষ তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে। তাই ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ডিমলা উপজেলা ধূমপান মুক্ত করা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদুজ্জামান। তিনি এসময় বলেন আইন অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, শিশুপার্ক ও খেলাধুলার স্থান থেকে একশ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষেধ এবং ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুর দ্বারা ক্রয় বা তামাকজাত দ্রব্য সিগারেট ফেরি করে বা ভ্রাম্যমাণ দোকানের মাধ্যমে বিক্রি করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, সিগারেটের বিজ্ঞাপন প্রচার ও নাটক-সিনেমার দৃশ্যে ধূমপান ও মাদক গ্রহণের দৃশ্য প্রদর্শন করা নিষিদ্ধ। পাবলিক প্লেস, গণপরিবহন, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে ধূমপানমুক্ত এলাকা সাইন বোর্ড স্থাপনা না করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আর্থিক জরিমানার মুখোমুখি হতে পারে।
প্রশিক্ষণে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আখতার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান বাবু উত্তম কুমার রায়, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ আয়শা সিদ্দীকা, খগাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, নাউতারা ইউপি চেয়ারম্যান আশিক ইমতিয়াজ মোর্শেদ মনি, খালিশা চাপানী ইউপি চেয়ারম্যান সহিদুজ্জামান সরকার, ডিমলা সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোকলেছুর রহমান, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা খন্দকার এনামুল কবীর প্রমুখ।
মুক্ত আলোচনায় উপস্থিত বক্তারা বলেন, মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এ তামাক, তাই তামাক চাষ একেবারেই বন্ধ করা প্রয়োজন। তামাক চাষ কৃষি জমির উর্বরতা নষ্ট করে। ধূমপান ও তামাক সেবন একটি ভয়াবহ নেশা। এ নেশা থেকে মানুষকে বিরত রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধি করা যেমন দরকার, তেমনি আইনেরও কঠোর প্রয়োগ দরকার।