জোবায়ের হোসেন,ফেনী প্রতিনিধি:

ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেলের বিগত ৫ বছর দায়িত্ব পালন অবৈধ ঘোষনা করেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ৫ বছর আগে জারি করা রুল নিষ্পত্তিকল্পে এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে ওই সময়ের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল  হালিম মজুমদারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব  উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার এস এম কফিল উদ্দিন। সোহেল চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ ও মো. অজি উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান। পাশাপাশি বিগত ৫ বছরে মেজবাউল হায়দার চৌধুরী বেতন ভাতাসহ যে সকল সুযোগ সুবিধা নিয়েছেন তার বাবদ ৩৩,২৬,৬১৯ টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।রায় ঘোষনার তিন মাসের মধ্যে সোহেল চৌধুরীকে টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ব্যর্থ হলে জেলা প্রশাসককে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

গত নির্বাচনে এডভোকেট এ.এস.এম শহীদ উল্যাহ নামে এক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাচন নিয়ে ২০১৯ সালে আদালতে মামলা দায়ের করেন। তিনি জানান, রিট পিটিশন নং- ৩১৮৪/১৯ইং। তিনি জানান, ২০১৯সালে দলীয় প্রতীক ছিলো। আওয়ামী লীগ মনোনয়ন পান মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল। আমি সোহেল চৌধুরীর প্রতিপক্ষ হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলাম। আমার মনোনয়নপত্র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা অবৈধ ঘোষণা করেন। পরে জেলা প্রশাসক বরাবর আপিল করি। সেখানেও অবৈধ ঘোষণা করা হয়। পরে মহামান্য হাইকোর্টে আপিল করি। আজ যে বেঞ্চে রায় দিয়েছেন সে বেঞ্চে আপিল করি। এই বেঞ্চের বিচারক বিচারপতি জেবিএম হাসান। হাইকোর্ট আমার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন। হাইকোর্টের নির্দেশে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আমাকে প্রতীক দিয়েছেন। আমার প্রতীক ছিলো দোয়াত কলম। আমি একসপ্তাহ নির্বাচনী প্রচারনায় ছিলাম। এরপর সোহেল চৌধুরী হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লীভ টু আপীল করেছন সুপ্রিমকোর্টে। সপ্রিম কোর্ট উভয় পক্ষের শুনানির পর ছাগলাইয়া উপজেলা নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন। যথারীতি ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচন হয়েগেছে। এরপর কোভিড-১৯ এর কারণে ভোট বন্ধ ছিলো ২ থেকে আড়াই বছর। এরপর থেকে আমি এই মামলার পেছনে লেগে আছি। গত রোজার ঈদের আগে আমি সোহেল চৌধুরীর বিরুদ্ধে রুল ইস্যু করেছি। রুল ইস্যুর পর হাইকোর্ট বর্তমানে যে কোর্ট রায় দিয়েছেন সে কোর্ট মেজবাউল হায়দার চৌধুরীর কাছে জানতে চেয়েছে আপনি কোন ক্ষমতার বলে গেজেট বাদে, শপথ বাদে ক্ষমতায় বসে আছেন। চার সপ্তাহের মধ্যে জানান। এটার পরিপ্রেক্ষিতে সোহেল চৌধুরী কোর্টে অ্যাপেয়ার করেছে এবং শুনানি হয়েছে। ১৫দিনের শুনানি শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়েছে। রায়ে আমাকে বৈধ ঘোষণা করেছে। আরেকজন প্রার্থী ছিলো আবদুল হালিম তাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তার রিট পিটিশান ৩১৮৩/১৯। নির্বাচন ৫ম ধাপের হবে না ৬ষ্ঠ ধাপের হবে তা পুরো রায় ঘোষণার আগে বলা যাচ্ছেনা।এডভোকেট এ.এস.এম শহীদ উল্যাহ আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কফিল উদ্দিন।
তফসিল অনুযায়ী আসন্ন ছাগলনাইয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলা হয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে আর কোন বাধা রহিল না বলে জানাগেছে।

এই বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মেজবাউল হায়দার চৌধুরী সোহেল এর চেয়ারম্যান পদ আর নেই,দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে।
তবে ছাগলনাইয়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম কমল বলেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, “আমাকে এখনো কোনো লিখিত কাগজপত্র পাঠানো হয়নি এই বিষয়ে। আমি এখনো পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কোনো প্রকার দায়িত্বে নেই “।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version