সিয়াম হাসান , গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: বাঙালি লোকায়ত সংস্কৃতির অন্যতম উপকরণ হাত পাখা। গ্রাম কিংবা শহর সব জায়গাতেই রয়েছে হাত পাখার কদর । গ্রীষ্মের খরতাপ থেকে শরীরকে শীতল রাখতে শত শত বছর ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে হাত পাখা। বছরে অন্য সময়ে হাত পাখার ব্যবহার না থাকায় বাজারে তেমন চাহিদা থাকে না। তবে কয়েক সপ্তাহের অসহনীয় গরম আর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে গাইবান্ধায় বেড়েছে হাতপাখার কদর। বৈদ্যুতিক পাখার যুগে অনেকটা হারিয়েই যেতে বসেছে হাতপাখা । তবে তীব্র গরমে ও লোডশেডিংয়ে ভয়াবহতায় মানুষের শরীরকে শীতল রাখছে হাত পাখা ।

সারা দেশের মতো গাইবান্ধা জেলাতেও চলছে তীব্র তাপপ্রবাহ। গেল কয়েকদিন ধরে টানা গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। হাঁসফাঁস অবস্থা খেটে খাওয়া মানুষদের। লোডশেডিংয়ে সাধারণ মানুষের ভরসা হাতপাখায়।

তীব্র গরমে চাহিদা থাকায় বর্তমানে গাইবান্ধার বিভিন্ন স্থায়ী হাট বাজারে, রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল , নৌঘাটে দেখা মিলেছে ভ্রাম্যমাণ হাতপাখা বিক্রেতাদের । এসব দোকানে মিলছে বাহারি রঙের পাখা । বাঁশ ও কাপড় ও তালপাতা দিয়ে তৈরি এসব হাত পাখার মনোমুগ্ধকর নকশা দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায় ক্রেতাদের। অনেকে তাই প্রয়োজনের পাশাপাশি ঘর সাজাতেও বিভিন্ন রং ও নকশার হাতপাখা কিনছে ।

এদিকে চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাইকারিতে পাখার দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে যেখানে বাঁশের হাতল দিয়ে তৈরি প্রতি পিস হাতপাখার দাম পড়ত ৯ থেকে ১০ টাকা। এখন সেই হাতপাখা পাইকারি প্রতি পিস ১৫ থেকে ১৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা আক্ষেপ করে জানান, প্লাস্টিকের বানানো পাখা ও বিভিন্ন বাহারি ডিজাইনের রেডিমেড পাখা তাদের ব্যবসায় ঢল ফেলেছে। তারা আরও জানান, এ বছর গরমের শুরু থেকেই হাতপাখার চাহিদা ছিল প্রচুর তাই অন্য বছরের তুলনায় বিক্রি বেশি হচ্ছে।

পাখা বিক্রেতা বাদল মিয়া জানান, গরম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাতপাখার চাহিদা শুরু হয়। তবে গরম বেশি পড়ায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শহরে হাতপাখার কদর বেড়েছে। আকার ও মান ভেদে বাঁশ ও কাপড়ের তৈরি এসব পাখা ২০ টাকা শুরু করে ৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

হাত পাখা কিনতে আসা আজিজুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে অসহনীয় গরম আর লোডশেডিং থেকে একটু স্বস্তি পেতে হাত পাখার বিকল্প নেই। চার্জার ফ্যানের দাম অনেক বেশি , তাই গরম থেকে রেহাই পেতে হাত পাখা ছাড়া উপায় নেই।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version