দ্যা মেইল বিডি / খবর সবসময়

; ;

দ্যা মেইল বিডি ডট কম

তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিবন্ধিত অনলাইন পত্রিকা, নিবন্ধন নং- ১১

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

এ ডিজিটাল যুগে বাস্তব কোন দৃষ্টান্তে নয়, ‘যৌতুক’ শব্দটি শুধু অভিধানেই পাওয়ার কথা ছিল। চরম পরিতাপের বিষয় হচ্ছে যে আজও দেশের আনাচে কানাচে শহর ও গ্রামাঞ্চলে যৌতুকের বলি হচ্ছেন শেফালী বেগমের মত অবলা নারীরা।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ১নং রহিমপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড এর কালেঙ্গা গ্রামে যৌতুকের জন্য শ্বশুরবাড়িতে শেফালী বেগম নামের এক গৃহবধূ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। শেফালী বেগম একই এলাকার মো: রব্বান মিয়ার মেয়ে। বিয়ের ১০ বছর অতিবাহিত হয়েছে শারীরিক নির্যাতন আর দুঃখ আর নিদারুণ নির্যাতনে। বিচার শালিশ বৈঠক হয়েছে একাধিকবার। যৌতুক ও পরপর ৩টি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়ায় স্বামী ও শাশুড়ি, ননদ এর অমানবিক নির্যাতন ধৈর্য্য ধরে মেনে নিয়ে ১০টি বছর কাটালেন শেফালি বেগম। ২লাখ টাকা যৌতুক দিতে না পারা ও পর পর কন্যা সন্তান জন্মের ফলে শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতিতা শেষ পর্যন্ত পড়নের কাপড়ে মারধোর করে ৩টি কন্যাসহ শেফালী বেগমকে পাঠিয়ে দেয়া হয় দরিদ্র পিত্রালয়ে। ৩ সন্তানকে নিয়ে দরিদ্র দিনমজুর পিত্রালয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শেফালী। তাদের কন্যারা হলেন, তারমিন বেগম, বয়স ৮ বছর ৬ মাস,তানজুম বেগম, বয়স ৭ বছর,ফারজানা আক্তার, বয়স ০৬ মাস। স্থানীয় ভাবে বার বার বিচার বৈঠকে ও মন ভড়েনি পাষণ্ড স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের। এঘটনায় নিরুপায় হয়ে গত (১৬ এপ্রিল) মঙ্গলবার শেফালি বেগম বাদী হয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩নং আমলী আদালত মৌলভীবাজারে তার স্বামী চেরাগ মিয়া আকাশ(৩০) ও তার বোন রহিমপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রেজিয়া বেগম (৩৫) উভয় পিতা: মৃত শাহাব উদ্দিন এর নাম উল্লেখ পুর্বক একটি মামলা দায়ের করেন। সি আর মামলা নং- ১৩৪/২৪ কমল: যৌতুকের অভিশাপ থেকে নারী সমাজকে বাঁচাতে সরকারী এবং বেসরকারী বিভিন্ন পর্যায়ের উদ্যোগ নেয়ার কথা হলেও ফাইলবন্দী।

যৌতুকের বিরুদ্ধে আছে কাগজে কলমে কঠোর আইন, যৌতুকের বিরুদ্ধে জনমত গঠনেও নেয়া হয়েছে নানামুখী কর্মসূচী। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলামের অনুসারী। ইসলাম ধর্মে যৌতুক প্রথা নিষিদ্ধ। যৌতুক দেয়া-নেয়াকে ইসলাম ধর্মে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু যৌতক প্রথা দূরীকরণে এখনও কাঙ্খিত ফল শূন্যের কৌটায়। প্রতিদিনই যৌতুকের বলি হচ্ছে নারীরা। যৌতুক দিতে না পারার কারণে গরিব ঘরের মেয়েদের বিয়ে হচ্ছে না সময় মতো। হলেও পাচ্ছে না যোগ্য পাত্র। আবার বিয়ের পর যৌতুকের জন্য চলছে অমানুষিক নির্যাতনের শিকার। অনেকে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনা দেশ ও জাতির জন্য কিছুতেই মঙ্গলকর না হলেও তা থামানো যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধিতে আক্রান্ত পরিনত হয়েছে। প্রতিবছরই যৌতুকের কারণে নির্যাতন ও হত্যার শিকার হচ্ছে অসংখ্য নারী। যার সঠিক পরিসংখ্যান কারও জানা নেই। যৌতুক কেবল গরিবের ঘরে নয় মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত, শিক্ষিত, ধনী সব ধরনের পরিবারেই ছড়িয়ে আছে। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এখনও মনে করে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা স্বামীর অধিকার। এ মানসিকতা অনেক উচ্চশিক্ষিত পুরুষের মাঝেও আছে। প্রথমে এ মানসিকতার পরিবর্তন করলেই সমাজের বহু নারী নির্যাতন বন্ধ হয়ে যাবে। শুধু আইন দিয়ে সমাজের এই অন্যায় অনাচার দূর করা সম্ভব নয়। যৌতুকবিরোধী আইনের কঠোর প্রয়োগের পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে যৌতুকবিরোধী সামাজিক আন্দোলন।

Share.
Leave A Reply

মোঃ আব্দুল আওাল হিমেল
প্রকাশক ও সম্পাদক 
দ্যা মেইল বিডি ডট কম
মোবাইল: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
ইমেইল: themailbdnews@gmail.com
ঠিকানা: ১০২/ক, রোড নং-০৪, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, শ্যামলী, ঢাকা-১২০৭

নিউজরুম: +৮৮০ ১৩১৪-৫২৪৭৪৯
জরুরী প্রয়োজন অথবা টেকনিক্যাল সমস্যা: +৮৮০ ১৮৩৩-৩৭৫১৩৩

© 2025 Themailbd.com. Designed and developed by Saizul Amin.
Exit mobile version