আড়াই মাসে ৮টি দূর্ঘটনা, নিহত ১৮ জন, আহত ৩৩ জন

লোকমান আহমদ (সিলেট):
সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক এ যেন এক মরণ ফাঁদ। সিলেটের অত্যন্ত সুপরিচিত
পর্যটন স্পট জাফলং যাওয়ার জন্য এই সড়ক ব্যবহার করতে হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভ্রমন পিপাসুরা সিলেটে ভ্রমণ করতে এসেই প্রথমেই যে স্থান ঘুরার চিন্তা করেন সেটি হচ্ছে জাফলং। কিন্তু এই মহাসড়কে যে হারে দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে সে জায়গায় পর্যটকদের মনে এখন বিরাজ করছে ভয়।

সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ এই রাস্তায় দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারত থেকে চোরাচালান এসে প্রবেশ করে। এবং বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরছে এই সড়কে। অবস্থা এখন এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে, একজন যাত্রী নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে তাকে প্রতি মুহূর্তেই উৎকণ্ঠায় থাকতে হচ্ছে।

নিশচার প্রতিবেদন অনুযায়ী এবছর জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত মোট ৮ টি দূর্ঘটনায় মোট ১৮ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩৩ জন আহত হয়েছেন। তবে বেশিরভাগ দূর্ঘটনা ঘটেছে জৈন্তাপুর ও হরিপুর এলাকায় হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অবরোধ তামাবিল সড়ক অবরোধ করা হয়। অবরোধের কারণে সড়কের দুই পাশে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। শত শত যানবাহন আটকা পড়লে স্থানীয়দের সাথে প্রশাসন বৈঠক করে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

প্রতিবাদকারী স্থানীয় কয়েকজন জানান, গতকাল সোমবার দুপুরে ওই সড়কে পিকআপ-লেগুনার সংঘর্ষে একইসাথে ছয়জনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও প্রতিনিয়ত এই সড়কে দুর্ঘটনা ঘটছে কিন্তু প্রশাসন কিংবা পরিবহন সংশ্লিষ্টরা এসব দুর্ঘটনার দায় নেয় না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। গতকালের দুর্ঘটনার পর প্রশাসন ও পরিবহন নেতাদের পক্ষ থেকে সমবেদনা জানানো হয়নি।

তারা জানান, এই সড়ক দিয়ে কোন ধরণের বাধা ছাড়া অবৈধ যানবাহনের মাধ্যমে চোরাচালানের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। যে কারণে এই সড়কে দুর্ঘটনার সংখ্যা ইদানিং বৃদ্ধি পেয়েছে। দুর্ঘটনার পরপর সড়ক অবরোধ করা হয়। এরপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের অনুরোধে অবরোধ তোলা হলেও পরবর্তীতে কার্যত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

নিসচা কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট বিভাগীয় কমিটির সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মিশু বলেন, তামাবিল মহাসড়কে যারা গাড়ি চালান অধিকাংশই ট্রেনিং প্রাপ্ত নন। অদক্ষ ড্রাইভার যে গাড়ি চালানো হচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশের ভূমিকা পালন এবং বিআরটিএ কর্তৃক যেনো অদক্ষ ড্রাইভারদের লাইসেন্স না দেওয়া হয়।

তামাবিল থানা হাইওয়ের অফিসার ইনচার্জ মো: ইউনুস আলী বলেন,
ঘনঘন সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে অদক্ষ ড্রাইভার এবং কম বয়সী ছেলেরা গাড়ি চালাচ্ছেন। এবং এই সড়কের অনেক জায়গা ভাঙ্গাচুরা। আবার বেশি অংশ গাড়ির ফিটনেস নেই, অনেক সময় ড্রাইভাররা অসচেতনতার ফলেও এরকম দূর্ঘটনা ঘটছে।

জৈন্তাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, আর রাস্তা ইদানিং অনেকটাই ভেঙ্গে গেছে খুব বড় বড় গর্ত হয়েছে রাস্তার মধ্যে, এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক যারা গাড়ি চালাচ্ছেন এবং ফিটনেস বিহীন গাড়ি নিয়ে যারা রাস্তায় নামছেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিব।

Share.
Leave A Reply

Exit mobile version