রবিবার, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

পিতা-মাতার আহাজারি সুষ্ঠু তদন্তে সত্য উদ্ঘাটন

তিমির বনিক,মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

চা শ্রমিক পরিবারের ৪ সন্তানদের মধ্যে এক সন্তান আগেই মারা গেছে। অভাব অনটনে টানাটানির সংসার। সেই অভাব কিছুটা ঘুচাতে শিশু প্রীতি উরাং কে ঢাকা পাঠিয়েছিলাম। পরে ফিরলো লাশ হয়ে। অনেকটা আক্ষেপের সুরে এসব কথা বলেন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মিরতিঙ্গা চা বাগানে বসবাসকারী পিতা লুকেশ উরাং।

গত সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তিনি আরও বলেন, আমার মোট চার সন্তান। এক সন্তান আগেই মারা গেছে। সেদিন মারা গেল মেয়েটাও। এখন এক ছেলে এক মেয়ে আছে। আমার টানাটানির সংসার। হাওর-বিলে কুচিয়া মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করে কোনরকম সংসার চালাই।

মৃত্যুর আগে পর্যন্ত প্রীতি রাজধানীতে ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক দম্পতির বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো। সম্প্রতি সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় শিশু গৃহকর্মী প্রীতি উরাং এর নয় তলা থেকে পড়ে রহস্যজনক মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় মিরতিঙ্গা চা বাগানসহ দেশসহ মৌলভীবাজারে চলছে মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন। গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনা এলাকায় সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় এবং গত রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার মিরতিঙ্গা চা বাগানে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

প্রীতি ওড়াং এর মা নমিতা উরাং বলেন, ঢাকায় মেয়েকে দেয়ার জন্য আমাদের ১০ হাজার টাকা দিয়েছিলো। আমরা টাকা আনি নাই বলেছিলাম, টাকাগুলো থাকুক। মেয়ের বিয়াশাদি লাগলে টাকাগুলো একসাথে বিয়াশাদির খরচে লাগাবো। এটা আমার মনের ইচ্ছা ছিল। পরে তো মেয়ে মারা যাওয়ার পর ৫ হাজার টাকা দিয়েছিল।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মনু-দলই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরি বলেন, এই পরিবারটাকে আমি ভালোভাবে জানি। লুকেশ উরাংরা মোট চার ভাই। মাত্র এক ভাই চা বাগানের স্থায়ী শ্রমিক। আর তিন ভাইয়ের সংসার চলে টানাপোড়ানে। এই তিন ভাইয়ের মধ্যে লুকেশের অবস্থা আরও বেশি করুন।

মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এ ব্যাপারে আরও কর্মসূচি রয়েছে বলে জানান ভ্যালি সভাপতি ধনা বাউরি।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং কমলগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী বলেন, প্রীতির মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রভাবশালীরা সবসময়ই চা বাগানের সহজ-সরল মানুষদের সরলতার সুযোগ নিয়ে থাকেন। আর এই সরলতার সুযোগেই পিতা তার কন্যাকে হারিয়েছেন। প্রীতির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ আমরাও জানতে চাই।

বাদী তুলনায় বিবাদী অত্যন্ত প্রভাবশালী। সেজন্য উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত ছাড়া এই সত্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন রামভজন কৈরী।

অনুমতি ব্যতিত এই সাইটের কোনো কিছু কপি করা কপিরাইট আইনে দণ্ডনীয়।

প্রিয় পাঠক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যামেইলবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন themailbdjobs@gmail.com ঠিকানায়।

সর্বশেষ

Exit mobile version